ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। দীর্ঘ ১১ বছর পর এই উপজেলায় একক কমিটি ঘোষণা করা হলো, যা স্থানীয় দলীয় কোন্দলের অবসান ঘটাতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

১৩ মে নবগঠিত এই কমিটির অনুমোদন দেয় জেলা উত্তর বিএনপি। জেলা আহ্বায়ক এ কে এম এনায়েত উল্লাহ কালাম এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে দলীয় নেতাকর্মীদের ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কমিটির তালিকা প্রকাশিত হয়।

নতুন ঘোষিত উপজেলা বিএনপির ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহাম্মদ তায়েবুর রহমানকে এবং সদস্যসচিব করা হয়েছে আজিজুল হককে। কমিটিতে ২৪ জন যুগ্ম আহ্বায়ক রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে, পৌর বিএনপির ৯৫ সদস্যের কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আলী আকবর আনিস এবং সদস্যসচিব হয়েছেন সুজিত কুমার দাস। এই কমিটিতে ২৩ জন যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে স্থান পেয়েছেন।

জেলা উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার বলেন, "সকল পক্ষকে সমন্বয় করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ বিবাদ নিরসন করে দলকে সংগঠিত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, নতুন এই নেতৃত্বের মাধ্যমে গৌরীপুরে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও জোরদার হবে।"

স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, গৌরীপুরে সর্বশেষ একক উপজেলা ও পৌর কমিটি গঠিত হয়েছিল ২০০৯ সালে। এরপর ২০১৪ সালে নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও নেতৃত্বে দ্বন্দ্বের কারণে দুটি পৃথক উপজেলা কমিটি গঠিত হয়। একই সময়ে পৌর বিএনপির কমিটি গঠন করা হলেও এক বিতর্কিত নেতাকে আহ্বায়ক করায় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে সেই কমিটি স্থগিত হয়ে যায়।

বিভক্তির এই প্রেক্ষাপটে দীর্ঘদিন ধরে গৌরীপুর বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চলে আসছিল। দলীয় ঐক্য ফেরাতে ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর গৌরীপুর সরকারি কলেজ মাঠে উপজেলা ও পৌর বিএনপির যৌথ কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যার ধারাবাহিকতায় আজকের এই একক কমিটি গঠন হলো।

নবনির্বাচিত উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আহাম্মদ তায়েবুর রহমান বলেন, “দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। কেউ কেউ পথভ্রষ্ট হতেই পারেন। তবে বিএনপি এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি সংগঠিত ও গতিশীল। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা দলকে আরও সুসংগঠিত করতে কাজ করব।”

নতুন এই কমিটির মাধ্যমে গৌরীপুরে বিএনপির রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম নতুন গতিতে এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তৃণমূল নেতারা।