আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দলটির অনলাইন ও সাইবার কার্যক্রমও এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। শনিবার (১০ মে) রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সরকারি সূত্র জানায়, বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে নতুন করে আওয়ামী লীগ ও এর শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনার ভিত্তি তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি, সাইবার স্পেসে দলটির প্রচার-প্রচারণা ও ডিজিটাল কর্মকাণ্ড বন্ধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে প্রস্তুতি চলছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিপত্র জারি হলেই আমরা দ্রুত মেটা, গুগলসহ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক অনলাইন প্ল্যাটফর্মে চিঠি পাঠাবো, যাতে এসব মাধ্যমে দলটির সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা যায়।”
সূত্রমতে, আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট দেশত্যাগের পর থেকে দলটি মূলত সাইবার মাধ্যমে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স (সাবেক টুইটার) ব্যবহার করে দলীয় অবস্থান, বিবৃতি, মতামত প্রচার এবং রাজনৈতিক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল। একই সঙ্গে এই মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী ‘ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্যও’ প্রচার করা হচ্ছিল।
বিটিআরসি সূত্র জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার পরিপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজ ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে থাকা দলীয় কনটেন্ট ব্লক করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই এসব পেজ ও আইডি নিষ্ক্রিয় করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা দেশের রাজনীতিতে একটি নতুন যুগের সূচনা করতে পারে। তবে এটি কতটা কার্যকর বা দীর্ঘস্থায়ী হবে, তা নির্ভর করবে ট্রাইব্যুনালে চলমান বিচার প্রক্রিয়া ও আইনি কাঠামোর উপর।