অন্যান্য খবর রাজনীতি

আওয়ামী লীগের পক্ষে সামাজিক মাধ্যমে কথা বললেই গ্রেপ্তার!

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ১২-৫-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৫৮

সরকারের আনুষ্ঠানিক আদেশ অনুযায়ী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে দলটির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এবং সংগঠনের সব ধরনের কর্মসূচি দমন করতে আর কোনো আইনি জটিলতা থাকবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সোমবার (আজ) থেকেই নিষিদ্ধ ঘোষণার সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি হচ্ছে। এরপরই পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পাঠানো হবে।

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, “নিষিদ্ধ সংগঠনের কোনো কার্যক্রম ঢাকা রেঞ্জে চলতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ কর্মকর্তাদের (এসপি) স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

পুলিশ সদর দপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “সরকারি আদেশ কার্যকর হওয়ার পর আওয়ামী লীগ এখন কার্যত নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে বিবেচিত হবে। মিছিল, সমাবেশ বা গোপন বৈঠকে অংশ নিলে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করতে পারবে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলের পক্ষে প্রচার চালালেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সাইবার অপরাধ দমন শাখার এক কর্মকর্তা জানান, “ফেসবুক, ইউটিউব বা টুইটারে আওয়ামী লীগের পক্ষে কেউ পোস্ট বা মন্তব্য করলে—even বিদেশ থেকে—তাদের বিরুদ্ধে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা করা যেতে পারে। দেশে ফিরলেই গ্রেপ্তার করা হবে।”

সাবেক আইজিপি নূরুল হুদা বলেন, “সরকারের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে আইন অনুযায়ী পুলিশ দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে। গ্রেপ্তারে আর কোনো আইনি বাধা থাকবে না।”

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, “দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারায় বলা হয়েছে, সরকারি আদেশ অমান্যকারীকে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। এখন সেই ধারাতেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতেও আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, “অনলাইনেও দলটির উপস্থিতি নিষিদ্ধ করা হবে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম বন্ধে বিটিআরসি কাজ শুরু করছে।”

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, “সরকারি পরিপত্র জারির সঙ্গে সঙ্গে বিটিআরসির মাধ্যমে মেটা (ফেসবুক), ইউটিউব, টুইটারসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অনলাইন প্ল্যাটফর্মে চিঠি পাঠানো হবে। দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ, যেটির ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ, সেটিও নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করা হবে।”

দেশব্যাপী এই সিদ্ধান্তের প্রভাব ইতোমধ্যে পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো জানানো হয়নি।