মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩০৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে আরও শতাধিক মানুষ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার লাইভ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হামলার শুরুর দিকে আল জাজিরা নিহতের সংখ্যা ৩০ জন বলে জানালেও পরবর্তীতে রয়টার্সের বরাতে তা ১০০ জনে পৌঁছায়। এক ঘণ্টা পরেই হামাস নিহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে বলে জানায়। সর্বশেষ মেডিকেল সূত্রের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে এবং আহতের সংখ্যাও ব্যাপক।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, গাজায় হামলায় হামাসের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, হামাস সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় গাজার তিনটি বাড়ি, রাফাহ এবং খান ইউনিসে হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাতজ মঙ্গলবার সকালে এই হামলার নির্দেশ দেন। নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের বিরুদ্ধে শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তিনি সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি হামাসকে জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়ার জন্য দায়ী করেছেন।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গাজায় হামলা চালানোর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করেছে ইসরায়েল। গত ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার একদিন আগে, ১৯ জানুয়ারি হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়। তবে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর জন্য হামাস ও ইসরায়েলের আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় গাজায় আবারও হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
গত ১৫ মাস ধরে চলা সংঘাতে গাজায় অন্তত ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং লক্ষাধিক আহত হয়েছে। এছাড়া লাখ লাখ ফিলিস্তিনি ঘরছাড়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানানো হলেও ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে।
এই হামলার ফলে গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তরফ থেকে সংঘাত বন্ধ ও শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানানো হয়েছে।