ওপেন মেসেজ সম্পাদকীয়

জুলাই শুধু আবেগ নয়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ের ডাক: প্রধান উপদেষ্টা

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ১-৭-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০১১

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “জুলাই শুধু আবেগে ভেসে যাওয়ার মাস নয়, এটি ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দৃপ্ত শপথের মাস।” মঙ্গলবার (১ জুলাই) ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই ছিল মর্মবাণী, যেখানে ফ্যাসিবাদী বিলাপ ছিন্ন করে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছি। এই আন্দোলন ছিল একটি ঐতিহাসিক ডাক—গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার, স্বৈরাচারী শাসনের অবসানের। আমাদের এখনকার দায়িত্ব, যেন আর কখনও গণঅভ্যুত্থানের প্রয়োজন না হয়। স্বৈরশাসনের যেকোনো চক্রান্ত শেকড় গজানোর আগেই দমন করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য জনগণকে তাদের সাংবিধানিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা, রাজনৈতিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের সুযোগ যেন হারিয়ে না যায়, তা রক্ষা করা। শহীদদের আত্মত্যাগের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমাদের নতুন করে শপথ নিতে হবে। প্রতিবছর জুলাই যেন গণতান্ত্রিক চেতনার উৎসবে পরিণত হয়—এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।”

ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাসব্যাপী কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়। উন্মোচন করা হয় ‘জুলাই ক্যালেন্ডার’—যেখানে পুরো মাসজুড়ে নানা কর্মসূচির সময়সূচি উল্লেখ রয়েছে।

এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে—মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায়—শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। একই দিনে ‘জুলাই খুনিদের’ বিচারের দাবিতে দেশব্যাপী গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু হয়েছে, যা চলবে ১ আগস্ট পর্যন্ত।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে শহীদদের স্মরণে ‘জুলাই শিক্ষাবৃত্তি’ চালু করা হয়েছে, যা প্রতিবছর মেধাবী ও মানবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে।

কর্মসূচি অনুযায়ী ৫, ৭ ও ১৪ জুলাই বিশেষ দিবস হিসেবে পালিত হবে। তবে পুরো আয়োজনের চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ৫ আগস্ট, যা এখন ‘৩৬ জুলাই’ নামে পরিচিত। ঐদিন অনুষ্ঠিত হবে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন, শহীদ পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, বিজয় মিছিল, এয়ার শো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও ড্রোন শো।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জুলাই মাসজুড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকেই গড়ে ওঠে গণআন্দোলনের ঢেউ, যার চূড়ান্ত রূপ নেয় ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে। সেই গণঅভ্যুত্থানই ইতিহাসে ‘জুলাই বিপ্লব’ নামে খ্যাতি অর্জন করেছে।