সচিবালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এখনো আওয়ামী লীগপন্থী আমলারা বহাল আছেন—এমন অভিযোগ এনে নতুন প্ল্যাটফর্ম 'জুলাই ঐক্য' এক তালিকা প্রকাশ করেছে।
মঙ্গলবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে প্ল্যাটফর্মটি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শহীদ মুহতাসির রহমান আলিফের বাবা মোহাম্মদ গাজীউর রহমান, যিনি নিজ হাতে তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের নাম পড়ে শোনান।
তিনি বলেন, “আমার ছেলে গণতন্ত্র চেয়েছিল, স্বচ্ছ নির্বাচন চেয়েছিল, অথচ আমরা দেখছি আজও যারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে ছিল, তারা প্রশাসনে বহাল।”
গাজীউর রহমান অভিযোগ করেন, “যারা অন্যায় করেছে, তারাই আজ তদন্ত করছে—এটা কোন বিচার ব্যবস্থার নমুনা?”
তিনি আরও বলেন, “যারা জেলে ছিল, তারা বাড়ি ফিরে ভালো আছে, অথচ যারা সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছে, তারাই আজ হুমকির মুখে।”
‘জুলাই ঐক্য’ জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে তথ্য সংগ্রহ করে ৪৪ জন সচিব ও শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তার নাম চিহ্নিত করেছে, যারা বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
তালিকায় পানিসম্পদ সচিব নাজমূল আহসান, পরিবেশ সচিব ফারহানা আহমেদ, কৃষি সচিব এমদাদুল্লাহ মিয়া, ভূমি আপিল বোর্ডের সচিব ইব্রাহিম, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেকসহ আরও অনেকের নাম রয়েছে।
এছাড়া অর্থ বিভাগের সচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার, দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন, প্রতিরক্ষা সচিব আশরাফ উদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব ইশরাত চৌধুরী, এবং স্বাস্থ্য সচিব সাহদুর রহমানও রয়েছেন এই তালিকায়।
‘জুলাই ঐক্য’ দাবি করেছে, এরা সবাই পূর্ববর্তী সরকারের রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের মাধ্যমে ক্ষমতা চর্চা করেছেন এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নষ্ট করেছেন।
সংগঠনটি মনে করে, এই ব্যক্তিদের বহাল রাখা নতুন প্রশাসনের ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক সংস্কার প্রচেষ্টায় বড় অন্তরায়।
তারা আরও জানায়, যারা অতীতে দমন-পীড়নের নির্দেশে কাজ করেছে, তাদের বিচার না হলে সত্যিকার অর্থে শাসন কাঠামোর পরিবর্তন সম্ভব নয়।
তালিকা প্রকাশের পাশাপাশি ‘জুলাই ঐক্য’ প্রশাসনের দলীয়ীকরণ বন্ধ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত ও অপসারণের জন্য জাতীয়ভাবে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্ল্যাটফর্মটির নেতারা বলেন, তারা ভবিষ্যতেও আরও প্রমাণসহ তালিকা প্রকাশ করবেন এবং দেশজুড়ে নাগরিক আন্দোলন চালাবেন।
তালিকা প্রকাশের পর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে এ নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে।