সকল খবর দেশের খবর

ড. ইউনূস ও দুদকের বিরুদ্ধে "পরিকল্পিত প্রচারণা"র অভিযোগ টিউলিপ সিদ্দিকের

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ২৩-৬-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০১৫

যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও ব্রিটিশ সংসদ সদস্য টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করতে এবং ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্যে একটি পরিকল্পিত প্রচারণা চালাচ্ছেন।

বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক খ্যাতনামা আইন প্রতিষ্ঠান স্টেফেনসন হারউড এলএলপি এর মাধ্যমে ড. ইউনূস ও দুদকের চেয়ারম্যান বরাবর সম্প্রতি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন টিউলিপ। স্কাইনিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই নোটিশে টিউলিপ স্পষ্ট করে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে।

নোটিশে বলা হয়, ড. ইউনূস ও দুদকের উদ্দেশ্য ছিল টিউলিপ সিদ্দিকের রাজনৈতিক সুনাম নষ্ট করা এবং তাঁর নির্বাচনী এলাকার রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করা। টিউলিপ উল্লেখ করেন, তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা নিরপেক্ষভাবে যাচাই না করেই জনসমক্ষে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা যুক্তরাজ্যের একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির জন্য অগ্রহণযোগ্য এবং অপমানজনক।

আইনি নোটিশে বলা হয়, ১৮ মার্চ ও ১৫ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের চিঠি দেওয়া হয়েছিল। ৪ জুন একই বিষয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে। কিন্তু কোনো পক্ষ থেকেই এ পর্যন্ত কোনো জবাব পাওয়া যায়নি বলে দাবি করা হয়েছে।

এছাড়া ইউনূসের লন্ডন সফরকালে টিউলিপ তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তবে ইউনূস সেই আহ্বানে সাড়া না দিয়ে সাক্ষাৎ এড়িয়ে যান। স্টেফেনসন হারউড মনে করে, এই সাক্ষাৎ প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে ড. ইউনূস টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছেন।

বিবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস টিউলিপের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করার কারণ ব্যাখ্যা করেন। কিন্তু স্টেফেনসন হারউড নোটিশে উল্লেখ করে, “প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটি একটি আইনি বিষয় এবং তিনি এতে হস্তক্ষেপ করতে চান না। অথচ তাঁর অবস্থান দ্ব্যর্থপূর্ণ এবং ন্যায়সংগত নয়।”

নোটিশে আরও বলা হয়, “আমাদের প্রত্যাশা ছিল, এমন গুরুতর অভিযোগ আনার আগে ড. ইউনূস তথ্য যাচাই করবেন। পাশাপাশি, যখন দুদক তদন্ত করছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তখন টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে জনসমক্ষে নেতিবাচক মন্তব্য অনুচিত।”

নোটিশে স্পষ্টভাবে দাবি করা হয়েছে, টিউলিপের বিরুদ্ধে যে ‘পরিকল্পিত অপপ্রচার’ চালানো হয়েছে, তা বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া দাবি করা হয়, দুদকের তদন্ত কার্যক্রম যদি বাস্তবিকভাবে বন্ধ হয়ে থাকে, তা পরিষ্কারভাবে জানানো হোক।

স্টেফেনসন হারউড জানায়, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট জবাব না পেলে টিউলিপ সিদ্দিক এই অভিযোগ ও প্রচারণাকে ‘সমাপ্ত ও অবান্তর’ বলে ধরে নেবেন এবং পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

নোটিশের একটি অনুলিপি দুদকের চেয়ারম্যানের পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়।

এ প্রসঙ্গে এখনো ড. ইউনূস বা দুদকের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে কূটনৈতিক মহলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা তীব্র হয়েছে। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং প্রবাসী রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।