জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আলোচিত 'জুলাই সনদ' চূড়ান্তকরণ এবং পূর্বের অসমাপ্ত প্রস্তাবগুলোর ওপর ঐকমত্য গড়তেই মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই বৈঠক শুরু হয়, যা চলবে আগামী ১৯ জুন পর্যন্ত।

বৈঠকে অংশ নিয়েছে বিএনপি, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ একাধিক রাজনৈতিক দল। তবে জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধিকে বৈঠকে অংশ নিতে দেখা যায়নি।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে জানান, “আমরা এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছি না।” তবে অনুপস্থিতির কারণ সম্পর্কে কিছু জানাননি তিনি।

বৈঠকের শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, “আমরা আশা করছি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই একটি গ্রহণযোগ্য জুলাই সনদ প্রণয়ন করতে পারব। যদিও সব বিষয়ে পূর্ণ ঐকমত্য সম্ভব না– তবুও জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে একটি যৌথ ঘোষণা আসবে।”

তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে। সংকট উত্তরণে সবাইকে দায় নিতে হবে।”

কমিশনের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যায়ের আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে— সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সংসদের দ্বিকক্ষ পদ্ধতির প্রস্তাব, প্রধান বিচারপতির নিয়োগ প্রক্রিয়া, নারী প্রতিনিধিত্বের ন্যূনতম কোটা নির্ধারণ, এবং স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন সংক্রান্ত বিষয়গুলো।

এর আগে গত ৩ জুন ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই আলোচনার সূত্র ধরে বর্তমানে এ বৈঠকে দ্বিতীয় ধাপের বাকি বিষয়গুলো চূড়ান্ত করতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

কমিশন সূত্র বলছে, জুলাই সনদ একটি রাজনৈতিক রূপরেখা হিসেবে জাতীয় সংলাপের ভিত্তি স্থাপন করবে, যা আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই প্রকাশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।