বিতর্কিত নির্বাচন পরিচালনার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৩ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামসুজ্জোহা সরকার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ আবেদন করেন। শুনানির জন্য আদালত সময় নির্ধারণ করেছে।

এর আগে রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে কে এম নুরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়।

মামলাটি করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির পক্ষ থেকে শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা মামলায় কে এম নুরুল হুদাসহ মোট ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনে পৃথকভাবে আরও ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দিয়েছে দলটি।

বিএনপির অভিযোগ, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একাধিক অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সবচেয়ে বেশি বিতর্ক দেখা দেয়। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ অনুযায়ী, বেশিরভাগ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ আগের রাতেই সম্পন্ন করা হয়—যা ‘নিশিরাতের নির্বাচন’ হিসেবে পরিচিতি পায়।

তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন কে এম নুরুল হুদা। তার নেতৃত্বাধীন কমিশনে আরও ছিলেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ কবিতা খানম এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।

বিএনপির দাবি, এ নির্বাচন কমিশন ছিল ‘সরকারের হাতের পুতুল’, যারা প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করে দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। দলের পক্ষ থেকে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন কিংবা সাবেক কমিশনারদের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।