দেশে মোবাইল ফোন সিম ব্যবহারে নতুন বিধিনিষেধ আনতে যাচ্ছে সরকার। ব্যক্তিপর্যায়ে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১০টি সিম ব্যবহার করতে পারতেন, সেটি কমিয়ে এখন ৫টি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করা এবং সিম ব্যবহারের অপব্যবহার রোধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের ১০ম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, এক ব্যক্তির নামে অতিরিক্ত সিম নিবন্ধনের সুযোগ থাকায় সেগুলোর অপব্যবহার বেড়েছে। চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইল, এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ফোন নম্বর ক্লোন করে প্রতারণার মতো কর্মকাণ্ড বাড়ছে। এ কারণে সিম ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপের সুপারিশ করা হয়।
এছাড়া বৈঠকে এক বছর পরপর সিম নবায়নের বিষয়ে প্রস্তাবনা আনা হয়। সিম নবায়ন প্রক্রিয়া ও সীমা নির্ধারণ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি)।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ, প্রজেক্ট অনুমোদন কিংবা প্রশাসনিক কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তারের জন্য উপদেষ্টাদের নাম ব্যবহার করে তদবির করা হচ্ছে, যার সঙ্গে তারা জড়িত নন। আবার মাঠ প্রশাসনের ডিসি, ইউএনওসহ সরকারি কর্মকর্তাদের ফোন নম্বর ক্লোন করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
বিটিআরসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত সিমধারী প্রকৃত গ্রাহকের সংখ্যা ৬ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৫ জন। এর মধ্যে ৮০.৩২ শতাংশ গ্রাহক ৫টি বা তার কম সিম ব্যবহার করছেন। ৬ থেকে ১০টি সিম ব্যবহার করেন ১৬.২৩ শতাংশ, আর ১১ থেকে ১৫টি সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩.৪৫ শতাংশ।
বিটিআরসি জানিয়েছে, সরকার নির্দেশিত নতুন সীমা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে যেকোনো অনিয়ম ঠেকাতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।