Logo

করোনা সংকটে ময়মনসিংহ অঞ্চলের ৩৭৬২ টি পরিবারকে অর্থ সহায়তা দিল ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ

অনিন্দ্য বাংলা
রবিবার, জুন ১৪, ২০২০
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা : জুন ১৩,২০২০- করোনাকালিন পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ সারাদেশে ১৮৬৮৪ পরিবারকে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকার নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে। সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৩৭৬২ পরিবার ১ কোটি ১২ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকার অর্থ সহায়তা পেয়েছে । এর মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত প্রায় দুমাসের অধিক সময় ধরে লকডাউনের কারনে সংকটে থাকা নি¤œআয়ের মানুষের পরিবারের তাৎক্ষনিক চাহিদা পূরন করা সম্ভব হবে ।

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার ভিটিবাড়ী গ্রামের দরিদ্র গৃহিনী ফরিদা বেগম (৪১), অন্যের বাড়ী কাজ করেন। স্বামী আব্দুল মান্নান (৪৫) স্থানীয় বাজারে ছোট চা-স্টল দিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবারের জন্য তিন বেলা আহারের সংস্থান করেন। সরকার ঘোষিত সাধারন ছুটির কারনে উপাাজনের উৎস চা-স্টল বন্ধ রাখতে হয়। ফরিদা বেগম বলেন “ওয়ার্ল্ড ভিশনের এই টাকায আমার খুব উপকার হয়েছে। গত তিন মাস ধরে আমার ও স্বামীর উপার্জন বন্ধ, ধার দেনা করে অনাহার অর্ধাহারে বহু কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। স্বামী মান্নান অসুস্থ, টাকা পয়সার অভাবে ডাক্তার দেখাতে পারছিনা। আজ বিকাশের মাধ্যমে ৩০০০ টাকা পেয়েছি। এই টাকা দিয়ে ধার-দেনা শোধ করব আর কিছু জরুরী খাওয়া খাদ্য ও চা-স্টল চালু করতে প্রয়োজনীয় উপকরন কিনতে পারবো।”

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের গ্রেটার ময়মনসিংহ রিজিওন অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সেবাষ্টিয়ান পিউরীফিকেশন বলেন এই ধরনের সংকটে শিশুরা নির্যাতন ও শোষণের মতো বিষয়ে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে যে সময় তাদের মানসিক সাহায্য খুব প্রয়োজন। ইবোলা মহামারীর মতো অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা যায় যে শ্রেনীকক্ষের বাইরে থাকায় শিশুদের প্রতি বাড়ীতে সহিংসতা বিশেষ করে শারিরীক ও যৌন সহিংসতা , বাল্য বিবাহ এবং মানসিক নির্যাতন বেড়ে যায় ।

ফরিদা বেগমের মতো ময়মনসিংহ অঞ্চলের (ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগ ) ৪ জেলায় (ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, শেরপুর ও টাংগাইল) ১১ টি উপজেলার গ্রামাঞ্চলের ৩৭৬২ পরিবার ৩০০০ টাকা করে নগদ অর্থ সহায়তা পেয়েছে ।

সেবাষ্টিয়ান পিউরীফিকেশন আরও বলেন “ বাংলাদেশ সরকারে কোভিড-১৯ সংক্রমন প্রতিরোধের প্রচেষ্টার পরিপূরক হিসবে এ বছরের এপ্রিল মাসে ওয়ার্ল্ড ভিশন জাতীয় পযায়ে কোভিড-১৯ সাড়াদান কর্মসুচী গ্রহন করেছে যার লক্ষ্য হলো জনগনের জীবন রক্ষার উপকরন , সেবা ও তথ্য প্রদান করা। ওয়াল্ড ভিশন সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সাথে তাদের শিশুদের জীবন মানের উন্নয়নে কাজ করে থাকে। কোভিড-১৯ বিস্তারের কারনে অবহেলিত এসকল মানুষের জীবন ও জীবিকায় খুবই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে । কোভিড-১৯ সাড়াদান কর্মসুচী দেশের ২৪ জেলায় ওয়ার্ল্ড ভিশন কর্ম এলাকায় বাস্তবায়িত হচ্ছে যার মাধ্যমে শিশু , প্রতিবন্ধী মানুষ, বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি, নারী ও শিশু প্রধান পরিবারের চাহিদাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আমরা স্থানীয় সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে কাজ করে উপকারভোগী নির্বাচন করেছি” ।

একটি ব্যাংকের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকরাী সংস্থার সহযোগিতায় উপকারভোগীর মোবাইল ব্যাংক অ্যাউন্টে সহায়তার অর্থ সরসারি চলে যায় । মাত্র ২/৩ দিনের মধ্যে নিরাপদে ও দক্ষতার সাথে পৌছে যাচ্ছে এই সেবা।

“উপকার ভোগী নির্বাচন থেকে অর্থ হস্তান্তরের পুরো প্রক্রিয়াটাই বিভিন্ন সফটওয়্যরের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হয়ে থাকে । প্রথমে ব্যাংকে অর্থ প্রদানের আদেশ দেয় ওয়ার্ল্ড ভিশন , পরে সেই অর্থ মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারীর কাছে চলে যায়” বলেন সেবাষ্টিয়ান পিউরীফিকেশন ।

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ কোভিড-১৯ বিষয়ক সতর্ক বার্তা এবং সাবান , মাস্ক এর মতো হাইজিন সামগ্রী প্রদান করার মাধ্যমে ফরিদা বেগমের মতো পরিবারগুলোকে ভাইরাস সংক্রমনের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছে। এখন পর্যন্ত ময়মনসিংহ অঞ্চলে ওয়ার্ল্ড ভিশন ৩০৫০-পরিবারকে হাইজন কিটস এবং ১৫০০০ মানুষকে দেড় লক্ষ মাস্ক বিতরণ করেছে । আমাদের সামনের সারির কর্মীরা কমিউিনিটির নেতাদের সাথে কাজ করার মাধ্যমে শিশু, পিতা-মাতা ও অভিভাবকের ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধক বার্তা দিয়ে যাচ্ছে ।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি