Logo

গৌরীপুরে উপেক্ষিত নির্দেশ : মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন!

অনিন্দ্য বাংলা
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৩, ২০২০
  • শেয়ার করুন

স্টাফ রির্পোটার : বিশ্বব্যপি চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সাড়াদেশ যখন লকডাউনে আচ্ছন্ন, পরিস্থিতি সামলাতে সকলেই মরিয়া, ঠিক তখনি এ কঠিন সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দরিদ্র জনগোষ্টির জন্য দেয়া ১০ টাকা কেজি দরে চাল দিয়ে মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। এর সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ি ফায়দা লুটে নেয়ার চেষ্ঠা চালাচ্ছে। স্বাধীন বাংলার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশিক সোনার বাংলার সফল রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে বলছেন দলমত না ভেবে যে এ নিয়ে দুর্ণীতি করবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এমনই ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের বোকাইনগর ইউনিয়নে। গত ৪/৫দিন আগে বোকাইনগর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড (১০ টাকা কেজি দর) ওএমএস ডিলার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান শাহীন ১৭০ কেজি সরকারি চাল আত্মসাতের অভিযোগে ওঠে। এর প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেঁজুতি ধর ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দিন তাকে গ্রেপ্তার করে। বোকাইনগর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড ডিলারশীপ বাতিল করে মামলা হয়।

তার গ্রেপ্তার নিয়ে বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহের গৌরিপুরে ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান শাহীনের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

গৌরিপুর সাবেক ছাত্রলীগ ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে উপজেলা সদরে কালীখলা সড়কে ডিলার মাহবুবুর রহমান শাহীনের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন খান, ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুবি আক্তার, কাউন্সিলর আব্দুল কাদির, মহিলা কলেজ শিক্ষক কামাল হোসন, উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম-সম্পাদক ম. নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
মানববন্ধনে সকলেই ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান শাহীনের মুক্তির দাবিতে বক্তারা বলেন, মিথ্যা বানোয়াট উদ্দ্যেশ প্রনোদিত হয়ে যারা ওএমএস ডিলার ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান শাহীনের বিরুদ্ধে এ কাজ করেছেন, তারা ঠিক করেন নি। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেয়ার আহবান জানান।

গৌরিপুরের সাধারণ জনগণ এ নিয়ে ব্যপক গুঞ্জন করছে এই করোনা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার তথা গোটা বিশ্ব যেখানে বাড়িতে অবস্থান করতে, জরুরী প্রয়োজনে বাহিরে গেলেও সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলতে বলা হচ্ছে। তার উপর প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নির্দেশ কোন দল না দেখে দরিদ্রদের জন্য দেয়া (১০ টাকা কেজি দর) ওমমএস’র চাল নিয়ে দূণীতিবাজদের কঠিন শাস্তি দেয়া হবে, এর পরও কিভাবে এমন মানব বন্ধন হয়। আর কিভাবে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা তার স্বপক্ষে মুক্তির দাবিতে বক্তব্য রাখে। জনমনে প্রশ্ন কিভাবে প্রশাসন এ সবের প্রশ্রয় দেয়।এতে কি বর্তমান সরকার ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের প্রধান দল আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে না।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সেঁজুতি ধর বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানববন্ধন নিয়ে বারবার নিষেধ করা হয়েছে, সত্বেও তারা এ কার্যক্রম চালিয়েছে তা দু:খজনক।

লকডাউনের মধ্যে এমন মানববন্ধন করা নিয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা বোরহান উদ্দিন বলেন, এই সময়ে জমায়েত নিষিদ্ধ। পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে মানববন্ধনের কোন অনুমতি নেয়া হয়নি। তারপরও তারা ঐ ডিলার মাহবুবুর রহমান শাহীনের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করে, এ খবরে পুলিশ ততক্ষণাৎ উপস্থিত হয়ে বাঁধা দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঘটনাটি ধামাচাপা ও অন্য দিকে প্রবাহিত করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।

উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার মাওয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রমিজ উদ্দিন মাইকিং করে সামাজিক দুরত্বের তোয়াক্কা না করে জন সমাগম ঘটিয়ে এ বিষয়ের সুরাহার চেষ্টা করেন। ওএমএস গ্রাহক ভূক্তভোগি দরিদ্রদের বলতে চাপ দেন, তাঁরাই ঐ চাল ডিলারের কাছে বিক্রি করেছেন।

সার্বিক বিষয় নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযাদ্ধা অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপেক্ষা করে যারা এমন ঘৃন্য কাজ করেছে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হওয়া উচিত। আর এ নিয়ে সামাজিক দুরত্বহীন ভাবে জন সমাগম ঘটানো খুবই হতাশাব্যঞ্জক দু:খজনক। হেয় মানসে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা সঠিক নয়।