Logo

ডিএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার আব্দুল আহাদের মত বিনিময়

অনিন্দ্য বাংলা
শুক্রবার, মে ২৮, ২০২১
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক: ডিএমপির মতিঝিলের উপ-পুলিশ কমিশনার আব্দুল আহাদ মতিঝিল বিভাগের সাতটি থানার (পল্টন, মতিঝিল, সবুজবাগ, মুগদা, শাহজাহানপুর, রামপুরা, খিলগাঁও) অফিসার ও ফোর্সদের সাথে পর্যায়ক্রমে মত বিনিময় করেছেন।

মত বিনিময়ের পাশাপাশি তিনি পুলিশ অফিসারদেরকে জনবান্ধব পুলিশী সেবা প্রদানে বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

তিনি বলেন, মতিঝিল বিভাগের প্রতিটি পুলিশ সদস্যের অঙ্গীকার হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি, মাদক, সন্ত্রাস এবং জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ। একইসাথে সকল অফিসার এবং ফোর্স পেশাদারিত্বের সাথে কর্তব্য পালন করবেন। থানায় আগত সেবা প্রত্যাশীদের পেশাদারিত্বের সাথে মানসম্মত সেবা প্রদান করা এবং সকলের সাথে ভালো আচরণ করার জন্যও বিশেষভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন।

পুলিশ বিভাগের কোন সদস্য যেন মাদক, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও অপরাধমূলক কাজে জড়িত না হয় সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা প্রদানসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।

আব্দুল আহাদ ডিএমপির পুলিশ উপকমিশনার হিসেবে গত ২০ মে ২০২১ তারিখ মতিঝিল বিভাগে যোগদান করেন। পূর্বে তিনি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ এর এসি , এডিসি ও ডিসি হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।

মোঃ আব্দুল আহাদ। বাংলাদেশ পুলিশ (বিপি) নং ৭৯০ ৬১১ ২৯২২। ২১ আগস্ট ২০০৬ সালে সহকারি পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের চাকরিতে যোগদান করেন। বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে দক্ষতা, সুনাম ও সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ এর এসি , এডিসি ও ডিসি হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।

গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগে কাজ করার সময় সুষ্ঠু ও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে এ কর্মকর্তা ২০১৪ সালে পিপিএম সেবা) পদকের স্বীকৃতি অর্জন করেন। সাহসিকতা পেশাদারিত্ব ও কৃতিত্বের পরিচয় বহনকারী এ কর্মকর্তার দিক নির্দেশনা ও সার্বিক তত্তাবধানে গুলশান বিভাগের বিভিন্ন সোসাইটি ফরেন কমিউনিটির সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন, বিভিন্ন মামলা তদন্তে প্রকৃত রহস্য উদঘাটনেসহ সার্বিক নিরাপত্তায় ব্যাপক ভুমিকা রাখেন। ফলে চৌকস কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ বিভিন্ন পদকে ভূষিত হন।

আব্দুল আহাদ। জন্ম দুই জানুয়ারী ১৯৭৯ সাল। নেত্রকোনার আটপাড়া খিলা গ্রামে। দাদা শেখ বড়মদি ছিলেন সংস্কৃতিমনা ও গ্রাম্য মাতব্বর। বাবা ব্যবসায়ী। মা মোসাম্মৎ রাবেয়া খাতুন একজন গৃহিনী। আট ভাই-বোনের মধ্যে আব্দুল আহাদ তৃতীয়, স্ত্রী উম্মে সালমা বি এ এলএলবি একজন কুসংস্কারমুক্ত আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারীনী, অবহেলিত নারীদের বিভিন্নভাবে সচেতন করার কাজে নিয়োজিত থাকেন সর্বদা। ব্যাক্তি জীবনে তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক।

আব্দুল আহাদ গ্রামের স্কুলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন। সেখানে পঞ্চম শ্রেনিতে বৃত্তি নিয়ে আটপাড়া খিলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি প্রথম বিভাগে ষ্টার মার্ক সহ পাশ করে ময়মনসিংহের সরকারি আনন্দ মোহন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাশ করেন। ২০০১ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হইতে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৫ সালে ২৬ তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে জামালপুর বকশীগঞ্জের কেয়ামতুল্লাহ সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। নেশা তাঁর সরাসরি জন মানুষের সেবা করার। এ নেশায় তিনি আবার ২৫ তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারি পুলিশ সুপার পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হোন। পুলিশের ট্রেনিং শেষে প্রবেশনারি এএসপি ফরিদপুর, এএসপি হাইওয়ে পুলিশ, সহকারী কমিশনার ট্রাফিক পশ্চিম, ডিএমপি, এসি রমনা, এডিসি ডিবি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি পেশাগত দায়িত্বপালনের জন্য দেশী বিদেশী অনেক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছেন। ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি পরোপকারী ও সামাজিক উন্নয়ন ও কল্যাণ জনক কাজের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি আটপাড়া সমিতি, নেত্রকোনা জেলা সমিতি, বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ কর্মজীবী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি ২৫ তম বিসিএস অলক্যাডার ফোরামের সাবেক সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিসিএস অফিসার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কঙ্গো সাউথে অত্যন্ত সফলতা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তার এই সফলতায় তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদকে ভূষিত হন। পুলিশ বাহিনীতে তার সততা ও পেশাদারিত্বের কারণে রাষ্ট্রপতি পদক পিপিএম(সেবা),২০১৪ এবং গুলশান হলি আর্টিজান জঙ্গী হামলাকারীদের প্রতিরোধে নিজের জীবন বাজি রেখে সাহসিকতা বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ রাষ্ট্রপতি পদক সাহসিকতা,২০১৬ পদকে ভূষিত হন। এছাড়া পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে স্বীকৃতিস্বরূপ একাধিক পুরস্কার লাভ করেন।

তিনি ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনে ভারত, নেপাল, ভুটান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, সাউদ সুদান, কঙ্গো, সৌদি আরব ও আরব আমীরাত সহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন।

ছোটবেলা থেকেই আব্দুল আহাদের মনের কোণে সমাজের অনিয়ম, অস্থিরতা, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রবল ইচ্ছা কাজ করতো। সে কারণে স্বপ্ন পূরণের প্রত্যাশায় পুলিশ বাহিনীর মতো ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় সাহসিকতার সাথে নিজেকে নিযুক্ত করেন।

মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার, এই শ্লোগানে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশ পুলিশকে আরো গতিশীল, বেগবান ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।