অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক : কুয়েতে মানব পাচার ও অর্থ আত্মসাতের দায়ে রিমান্ডে থাকা বাংলাদেশের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপলুকে সহায়তার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন দেশটির দুই আইনপ্রণেতা (এমপি)।
ঘটনার তদন্তের সাথে জড়িত সুত্রের বরাত দিয়ে আল কাবাস পত্রিকা জানায়, ওই দুই আইনপ্রণেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে তাদের দায়মুক্তি প্রত্যাহারের জন্য দাবি জানাবেন কুয়েতের সরকার পক্ষের আইনজীবী।
দেশটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রী এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা মারিয়াম আল আকিল, মানব পাচারের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে জনসম্পদ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তিন মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিয়েছেন।
সুত্রের বরাত দিয়ে আল কাবাস পত্রিকা আরো জানায়, অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তা একটি তিন সদস্যের চক্রের সদস্য বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপলু।
শহিদ ইসলাম পাপলুসহ মোট দুইজনকে মানব পাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এরইমধ্যে ২১ দিনের জন্য কেন্দ্রীয় কারাগারের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। জনসম্পদ বিভাগের পরিচালক এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিচার চলছে।
দীর্ঘ অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশি সংসদ সদস্য পাপলু বছরে প্রায় দুই মিলিয়ন দিনার আয় করেছেন বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে শ্রমিকদের নিয়ে আসার মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়া ঠিকভাবে সম্পন্ন করতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুষ ও উপহারও দিয়েছেন তিনি, সেই খরচ বাদ দিয়েই ওই পরিমাণ লাভ হয়েছে তার। এ বিষয়ে কুয়েতের সরকারি তদন্ত এখনো অব্যাহত রয়েছে।
গত ৬ জুন এমপি শহিদ ইসলাম পাপলুর প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন কাগজপত্র ও দলিল জব্দ করে কুয়েতের তদন্ত দল। এতে দেখা যায় এক ব্যবসায়ীর এজেন্টের মাধ্যমে কোনরকম চুক্তি ছাড়াই ৬০ লাখ কুয়েতি দিনার পেয়েছেন শহিদ ইসলাম।
কুয়েতে মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী শহিদ ইসলাম পাপলু। কুয়েতে তার ৫০ লাখ দিনারের সম্পদ রয়েছে। তার প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত ব্যাংক আ্যকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে।
গালফ নিউজের প্রতিবেদনে পাপলুকে মাফিয়া নেতার সাথে তুলনা করা হয়েছে, যিনি দরিদ্র এবং নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের কাছ থেকে ‘কর’ আদায় করতেন। এক সাক্ষীর বরাত দিয়ে জানানো হয়, তিনি রয়ালিটির নামে একেকজন শ্রমিকের কাছ থেকে দিনে প্রায় ৮ ডিনার আদায় করতেন।
জিজ্ঞাসাবাদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালতেএ কর্মকর্তাকে এগারো লাখ দিনারের চেক, এবং আরেক সরকারি কর্মকর্তাকে নগদ ১০ লাখ দিনার দেয়ার কথা স্বীকারও করেছেন শহিদ।
সূত্র: গালফ নিউজ।
মতামত লিখুন :