Logo

বাত্তির নিচে অন্ধকার! কেউ কথা রাখেনি

অনিন্দ্য বাংলা
মঙ্গলবার, জুন ১৬, ২০২০
  • শেয়ার করুন

নূরুজ্জামান সরকার নীহার বকুল।

ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে তারাকান্দা পূর্বপাড়া অবস্থিত। উপজেলা সদরের কেন্দ্রবিন্দুতে বসবাস করেও সকলপ্রকার নাগরিক সুবিধা হতে বঞ্চিত আছে এলাকার জনসাধারণ! সবচেয়ে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তাহলো মাত্র ২ কিলো মিটার রাস্তা। রাস্তাটি আজ তাদের জীবনের বড় অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে। এই এলাকায় তারাকান্দার অধিকাংশ ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী এবং রাজনৈতিক নেতাদের বসবাস।যেমন দু’জন সুনামধন্য আইনজীবী এডঃ হারুন অর রশিদ ও রুহুল আমিন দুদু, বেশ ক’জন প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় (৮জন) প্রধান শিক্ষক, ৪ কলেজের প্রভাষক, ৬ জন ইমাম,সরকারি বে-সরকারি চাকুরীজীবি,বেশ ক’জন নামকরা আলেম, ডিলার সহ নামকরা ব্যবসায়ী, ড্রাইভার,ডাক্তার, শ্রমিকনেতা,কৃষক,জনপ্রতিনিধি আছেন,সেই সাথে আছেন বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ। এখানে আছে মাছের বড় বড় খামার, মুরগীর খামার বিস্তীর্ণ তরি-তরকারি সহ ফসলের মাঠ।এ রাস্তাটি ধরে প্রতিদিন কামারিয়া,রামপুর ও তারাকান্দা ৩টি ইউনিয়নের হাজার হাজার জনগণ ও শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী চলাচল করে। এখানে নামকরা ৩/৪টি স্কুল,২টি মাদ্রাসা,৮টি মসজিদ অবস্থিত। কিন্তু দুঃখের বিষয় এলাকার মানুষের বর্ষাকাল যেনো দুঃখের আগাম বার্তা নিয়ে হাজির হয়।তারাকান্দা টু দর্জিগাতি পর্যন্ত বর্ষার আগমনে তারা চলাচলের জন্য পাঁয়ে হাটা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।কাঁদায় পাঁয়ে হেটে আসাও অনেক সময় সম্ভব হয়না।বাধ্য হয়ে নদীর পাড়,ধলীরকান্দা বা মূলাবাড়ি, চড়ারকান্দা দিয়ে দুগুণ তিনগুণ ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হয়।অসুস্থতা জনিত কারণে একজন রোগিকে হাসপাতালে নেওয়ার জোগাড় নেই বর্ষাকালে।বর্ষার আগমনি বার্তা তাঁদের জন্য অভিশাপের নামান্তর। বারবার তারাকান্দার জনপ্রতিনিধিগণ নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে এখান থেকে প্রচারনা শুরু করে আর তাদেরকে বোকা বানায়। কমপক্ষে ৬ জন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান,এম,পি মহোদয় তাদের রাস্তা পাকাকরণের আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই করেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ ক’জন জানালেন, বর্তমানে যিনি উপজেলা চেয়ারম্যান ওনার শ্বশুরবাড়ি এখানে তিনিও প্রচারনা শুরু করেন এখান থেকে, আসার সময় গাড়ি রেখে হাটুজল পানি মাড়িয়ে আফাজ উদ্দিন সরকারের বাহির আঙ্গিনায় মিটিং করে ওয়াদা দিয়েছিল, চেয়ারম্যান হয়ে সবার আগে এ রাস্তা করে শ্বশুরালয়ে আসব,ওনার মাধ্যমে অনেক রাস্তা হলো এই অভিশপ্ত রাস্তাটি মুখ থুবড়েই পড়ে রইলো বলে জানান বেশ ক’জন।ইতিপূর্বে চেয়ারম্যান আঃ মতিন তালুকদার, সুরুজ চৌধুরী,মুজিবুল হক, মনি তালুকদার, আব্দুল জব্বার সাহেবগন কথা দিয়ে কথা রাখেন নাই।দু’জন সাংসদ ওয়াদা করেও তার বরখেলাপ করেছেন, কয়েকজন নেতা টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে কাজ আরম্ভ করা হবে বলেও জানায়,কিন্তু কাজ আর হয়নি। কি এক অদৃশ্য কারণে মানুষগুলো কে অবহেলায় ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়।

রাস্তাটি হবে এ আশায় সর্বজন শ্রদ্ধেয় বেশ ক’জন মুরুব্বী ইহলোক ত্যাগ করেছেন,যেমন কিতাব আলী সরকার,আঃ রহিম সরকার, কোরবান আলী সরকার, আপ্তাব উদ্দিন সরকার, ইন্জর আলী,আঃ সালাম ডাক্তার, আব্দুর রহমান মুন্সী , আবুল হোসেন সরকার, আঃ করিম ভেন্ডার, আফাজ উদ্দিন সরকার, রজব আলী সরকার, উছমান গনি মন্ডল, আন্তাজ উদ্দিন মন্ডল, জয়নাল আবেদিন মন্ডল, ওয়াহেদ আলী মন্ডল, শামছুল হক মন্ডল, মমরোজ আলী ফকির, ধলীরকান্দার অধ্যাপক কাজিম উদ্দিন সরকার,আবুল হাসিম,নন্দীপুরের গিয়াসউদ্দিন হামেদ মুন্সী,দর্জিগাতির ছাবেদ মাস্টার, নায়েব আলী,খালেক মেম্বার সহ আরো অনেকেই জীবদ্দশায় রাস্তাটি দেখে যেতে পারলো না।বর্তমান প্রজন্মের সবার প্রশ্ন আমাদের অপরাধটা কি?কেন সারাদেশে এবং আমাদের চেয়েও অনুন্নত অজপাড়াগায়ে রাস্তা পাকা বা হ্যারিংবন রাস্তা হলেও আমাদের টা কেন হয় না! ইতিমধ্যে ২ বার টেন্ডার (২কিঃমিঃ) হলেও কেনো কেঁটে নেওয়া হলো তাও তারা জানতে চায়।এখন ভরসা মাননীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী জননেতা শরীফ আহমেদ এম,পি।তাদের আবাল-বৃদ্ধ-বণিতাদের আশা এবার আর নিরাশ হতে হবেনা । কারণ শরীফ ভাই নাকি একবার জনদূর্ভোগ দেখলে সাথে সাথেই কাজের অর্ডার দেবেন।আমরাও তাই মনে করি। বাতির নিচে আর অন্ধকার দেখতে চাই না।অবিলম্বে বাজার হতে দর্জিগাতি পর্যন্ত বা বনপলাশিয়া পর্যন্ত এ অর্থবছরেই রাস্তাটি পাকাকরণ করা হউক।এতে করে ফিসারী ও ধান পাট সহ তরি-তরকারির উৎপাদনে সেরা এলাকাটি আরো সমৃদ্ধি লাভ করবে।

কেউ কথা রাখেনি ৫০ বছর কাটলো কেউ কথা রাখেনা,এবার হয়তো শরীফ ভাই তা ভুল প্রমাণ করে দিবেন।