দরদী, পরোপকারী, আদর্শিক এবং মুক্তকণ্ঠের স্বকীয়তায় উজ্জ্বল বৈশিষ্টজাত মানুষ হিসেবে এতো মানুষের ভীরেও তাকে আলাদা করা যায় অনায়াসে। অবিনাশি জীবনের গভীরতর সত্যের জিজ্ঞাসা মেলে তার কর্মময় সময়াচরণ অনুসরণ করার মাধ্যমে।এই নগরের উচ্চকিত এক কণ্ঠস্বর। মানুষ হিসেবে সাদামাটা, ব্যক্তিত্বে দৃঢ়চেতা, আপসহীন। মুক্ত চিন্তায়, লেখায়, বক্তৃতায় শাণিত প্রানবন্ত একজন। সৃজনশীল কাজে তার দক্ষতা এই শহরে প্রায় সর্বজনবিদিত। তিনি দক্ষ, বিনয়ী এবং মানবিক চেতনার মানুষ হিসেবে সবার দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম। নবীন তরুণ যুবরা তার সাথে আন্তরিক মেলামেশা এবং প্রণোদনামূলক আলাপচারিতায় উদ্দীপ্ত হন। যে কোন বয়সীদের সাথে তার মেশার ও মন কেড়ে নেয়ার অসাধারণ যোগ্যতা রয়েছে তার। প্রয়োজনে যেমন কথা বলেন, অপ্রয়োজনে ঠিক নীরব ও শান্ত।কৈশোর থেকে তিন দশকের পদচারণায় এক নাড়ীর টান এই শহরের মাটি জল প্রকৃতি সংস্কৃতি সাহিত্য গণমাধ্যম ও উন্নয়ন পরিক্রমার সাথে।
মানুষের দিকে আন্তরিকতা, মমতা ও ভালবাসা নিয়ে হাত বাড়ান এই মানুষ।তাঁর সকল কাজের সবকিছুতে একটি লক্ষ্য খোঁজে পাওয়া যায়- যার নাম মানবিকতা। নীরবে ও সরবে অনেক কাজ করে চলেছেন এই মানুষটি ।কিন্তু বাহুল্য আওয়াজ নেই কোনকিছুতে। তাঁকে বলতে শুনি- ‘আমার কাছে মানুষই পরম’। তাইতো এই করোনাকালে তাঁর লেখায় দেখতে পাই বিপর্যস্ত পৃথিবীর মানুষের কলরোল এবং সেই সাথে সুসময়ের আশাবাদ আর মানুষ হিসেবে কিংবা কর্তাব্যক্তি হিসেবে প্রত্যেকের করনীয় সম্পর্কে স্পষ্ট মতামত। তার লেখনী আর কথাবার্তা চলমান সময়কে যেন উজ্জীবিত করে।
স্বাধীন চৌধুরী নিজে যেমন বলেন, তেমনি করার ক্ষেত্রেও সবসময় এগিয়ে। যা বিশ্বাস করেন তাই বলেন এবং করে দেখাতে সচেষ্ট এই মানুষটি। করোনাকালের এই সংকটময় সময়ে বসে থাকেন নি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিত্য বেড়িয়ে পড়েন শহরময়।খাবার সঙ্কটে অতি কষ্টে থাকা মানুষের খাবার পেতে সহযোগিতা করেন- তা কী প্রশাসন কিংবা ব্যক্তি মানুষের সহযোগিতায়। ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদ ময়মনসিংহের তথা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সাহিত্যের সংগঠন। এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ময়মনসিংহের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের প্রায় সংগঠনের সংস্কৃতিজনদের কাছে উপহার হিসেবে আন্তরিকতা নিয়ে পৌঁছে দিয়েছেন অতি প্রয়োজনীয় জরুরি খাবারসামগ্রী।নিজের মানবিক চেতনার সংগঠন ‘মানবিক’-এর মাধ্যমে অস্বছল পরিবারগুলোর মাঝে যথাসাধ্য খাদ্য উপহার চলমান রেখেছেন।তিনি তার স্ট্যাটাসগুলোতে জানিয়ে দিয়েছেন মানবিক মানুষগুলোর সাপোর্টের কথা।তাদের এই সহযোগিতায় সেবা দিতে পারছেন বলে তাদের কাছে সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং তাদের এই অংশগ্রহণ যে অনেক মুল্যবান তা তুলে ধরে মানব সেবায় সকলকে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করার সনির্বন্ধ আহবান জানাচ্ছেন সবসময়। মহান মুক্তিযুদ্ধের সঙ্কটকালের মতো এক ক্রান্তিকাল বিরাজ করছে আজ। যা আজ শুধু এক দেশে নয়, বিশ্বব্যাপী।তাই তিনি এই সংগ্রামে যুব-তরুনদের সতর্কতা নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে যুক্ত হবার মানবিক সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হবার কথাও বলছেন সময়ের এই কঠিন দুর্যোগে।তিনি চিন্তা জগতের মানুষ হিসেবে যেমন মানুষের বিবেক জাগ্রত করার কথা বলছেন,তেমনি নিজের বাস্তবোচিত দায়কে মনে রেখে মাঠে কাজ করছেন নিরলসভাবে, ক্লান্তিহীন।
সময়ের প্রয়োজনে মানুষকে যে ঘুরে দাঁড়াতে হয়।পিছিয়ে পড়ার খোঁড়া অজুহাত অগ্রহণীয় তা মনে করিয়ে দেন মানবতার কবি স্বাধীন চৌধুরী। যুব-তারুন্যের উদ্দেশ্যে তো আরও বেশি তার উচ্চকিত কণ্ঠ, কবি হেলাল হাফিজের কবিতার মতো-‘এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়, এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।
লেখক: মাহমুদুল হাসান রতন, সম্পাদক- প্রতিদিনের কাগজ।
মতামত লিখুন :