Logo

মুজিববর্ষে জনবান্ধব ভূমি ব্যবস্থাপনায় ময়মনসিংহ সদর ভূমি অফিসের নতুন কর্মপরিকল্পনা

অনিন্দ্য বাংলা
শনিবার, মার্চ ৭, ২০২০
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক :

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শত বার্ষিকী ও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ময়মনসিংহ সদর ভুমি অফিস সেবার মান বৃদ্ধি, গ্রাহক হয়রানী প্রতিরোধ, ভুমি ব্যবস্থাপনা জনবান্ধব করতে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ।

চৌকস জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের নির্দেশনায়, ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোর সহযোগিতায় সহকারী কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এম সাজ্জাদুল হাসান শুরু করেছেন এই বর্ধিত উন্নয়ন সেবা কার্যক্রম।

এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম সাজ্জাদুল হাসান জানান, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ প্রতিটি ভূমি অফিসে সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে দ্রুততম সময়ে ভূমি সেবা দেয়া হচ্ছে।

ময়মনসিংহ জেলার রাজস্ব কার্যক্রমের আওতায় উপজেলা ভূমি অফিসে সেবা প্রত্যাশীদের জন্য খোলা হয়েছে ফ্রন্ট ডেস্ক। সেবা গ্রহীতাদের নামজারির আবেদন ফরমসহ সংরক্ষিত বিভিন্ন ফরম বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে ফ্রন্ট ডেস্কে।
নামজারি আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে পূর্বে ক্রমিক নাম্বার অনুসরণ করা হত না। এতে করে অনেক জটিলতা হতো। বর্তমানে নামজারি আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বান্ডেল আকারে ক্রমানুসারে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। ফলে নামজারির আবেদন নিষ্পত্তিতে গড় সময়ের পরিমাণ অনেকাংশে কমে গেছে। অগোছালো রেকর্ডরুমের জটিলতা এড়াতে রেকর্ডরু্মে রক্ষিত নথি অনুসন্ধান কার্যক্রম সহজ করার জন্য নথি অনুসন্ধান রেজিস্টার খোলা হয়েছে ।
১/১ এর ভূমি নামজারির ক্ষেত্রে যথাযথভাবে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে সরকারি স্বার্থ ক্ষুন্ন হওয়ার আশংকা ছিল। কিন্তু এই বিষয়টি সরাসরি সহকারী কমিশনার (ভূমি) সার্বিক তত্ত্বাবধানে গ্রাহক হয়রানী ও দূর্ভোগ কমে গেছে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক প্রত্যয়ন ছাড়াই ইউনিয়ন ভূমি অফিসে রেজিস্টার খোলা হতো, কিন্তু বর্তমানে ভূমি অফিসে সহকারী কমিশনারের প্রত্যয়ন ছাড়া কোন রেজিস্টার খোলা হয় না। এতে সাধারণ জনগণের হয়রানী লাঘব হয়েছে।
পূর্বে ভূমি অফিসগুলোতে মধ্যস্বত্তভোগী ও দালালে গিজগিজ করতো। সাধারণ মানুষ এদের খপ্পরে পরে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ ও হয়রানীর শিকার হয়েছে, দূর্নাম কুড়িয়েছে ভুমি অফিসগুলো। সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর সার্বিক মনিটরিং ও তদারকির ফলে বর্তমানে ভূমি অফিসগুলোকে দালালমুক্ত হয়েছে।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে সরকারি খাস জমি পূনরোদ্ধার হচ্ছে। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সরকারি খাস জমি হতে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে সীমানা নির্ধারণ ও অবহিতকরণ সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে।
বর্তমানে হাট-বাজার পেরীফেরী সংক্রান্ত কার্যক্রমে ব্যাপক পরিবর্তন ও উন্নতি সাধিত হয়েছে। জিতেন্দ্রগঞ্জ, বেগুনবাড়ী, শম্ভুগঞ্জ বাজারের আর.এস রেকর্ডে পেরীফেরী নকশা প্রস্তুত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিককালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ময়মনসিংহের স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন বলাশপুর মৌজায় 0.35 একর, দাপুনিয়া বাজার সংলগ্ন দাপুনিয়া মৌজার 0.60 একর, জয়বাংলা বাজারের 0.45 একর, অম্বিকাগঞ্জ বাজারের 0.80, একর, চরঈশ্বরদিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অভ্যন্তরে ০.০২ একর জমি উদ্ধারসহ অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ও সরকারী বাসায় বসবাসরত কর্মচারীর চলাচলের পথ, নদীর পাড়ে বসবাসরত অবৈধ দখলকৃত জমি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া কিছু উদ্ধারকৃত জমিতে বৃক্ষরোপন করা হয়েছে।
অফিসের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং অধিকতর স্বচ্ছতা আনয়ণে সর্বত্র সি,সি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। যা সহকারী কমিশনার সার্বক্ষণিক নজরদারী করেন।
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে আসা সেবা গ্রহীতাদের মাঝে ফলজ ও বনজ বৃক্ষ বিতরণ কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে।

ভূমি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ও প্রতিবন্ধকতা বিষয়ে তিনি অনিন্দ্যবাংলাকে জানান, ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় ১১ টি ইউনিয়ন থাকলেও সেখানে ভূমি অফিস রয়েছে মাত্র ৪টি। রয়েছে ১টি সিটি কর্পোরেশন ।

কম সংখ্যক ইউনিয়ন ভূমি অফিস, প্রযুক্তির অপ্রতুলতা, নেটওয়ার্কের গতি ক্ষীনতার কারণে সেবা প্রত্যাশীদের মানসম্মত সেবা প্রদান করা যাচ্ছে না। অপরদিকে সেবা গ্রহীতোদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় যথাসময়ে সেবা প্রদান কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।

আমি মনে করি এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে ইউনিয়ন ভূমি অফিস স্থাপনের পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন, দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগ, পদায়নসহ ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করতে হবে।

এছাড়া ময়মনসিংহ সদর উপজেলা ভূমি অফিসকে 3টি সার্কেলে বিভক্ত করলে জনবান্ধব ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা সম্ভব।