Logo

রূপনগর বস্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত নেত্রকোণাবাসীর পাশে হাওরপুত্র সাজ্জাদুল হাসান

অনিন্দ্য বাংলা
বৃহস্পতিবার, মার্চ ১২, ২০২০
  • শেয়ার করুন

ঢাকা প্রতিনিধি : ঢাকার মিরপুর রূপনগর বস্তিতে আগুন লেগে শত শত ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। মোহনগঞ্জ -মদন-খালিয়াজুরী তথা নেত্রকোণা জেলার প্রায় তিন সহশ্রাধিক নিম্ন আয়ের মানুষ এখানে বসবাস করে আসছিলো দীর্ঘদিন ধরে। ১১ মার্চ বুধবার সকালে হঠাৎ আগুন লেগে যায়,আগুনে বস্তির বেশির ভাগ ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এখানে যারা বসবাস করে তারা বেশীর ভাগই আশেপাশের কলকারখানার শ্রমিক, রিক্সা,ভ্যান,সিএনজি চালক ও গার্মেনটস কর্মী। সবা্বাই যখন নিজ নিজ কাজে ব্যাস্ত তখন ঘটে এই দুর্ঘটনা। সর্বনাশা আগুনের লেলিহান শিখায় কস্টে জমানো সঞ্চয় টাকা, চাল-ডাল, আসবাবপত্র সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সর্বশ্রান্ত হয়ে এখন সবাই রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব, বাংলাদেশ বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান পুড়ে যাওয়া বস্তি পরিদর্শনে যান। ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য বস্তিবাসীর সাথে নেত্রকোণার লোকজনের সাথে সংগে কথা বলেন, তাদের খোঁজ খবর নেন ও সমবেদনা জানান। সাজ্জাদুল হাসান এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বস্তিবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সারাক্ষণ দুস্থ মানবেতর মানুষদের পাশে আছেন। আপনাদের ভয় নেই, ইনশাআল্লাহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাদের কল্যাণে সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন। এই সর্বনাশা আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের সাহায্যে সাজ্জাদুল হাসান তাৎক্ষনিকভাবে ডিসি সাহেবকে ফোন করে দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোসহ ক্ষতিগ্রস্তদের সঠিক তালিকা প্রণয়নের তাগিদ দেন।

এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মোহনগঞ্জ সমিতি ,ঢাকা এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান, ক্রীড়া সম্পাদক মাহবুবুর রহমান খান মামুন,সমাজ কল্যাণ সম্পাদক লিয়ন চৌধুরী, কৃষি সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মুকুলসহ প্রচার সম্পাদক ও সাংবাদিক আকবর হোসেন,মেহেদী হাসান,মহসিন আজাদ,শরীফ আহমেদ,স্বেচ্ছাসেবক লীগকেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাস্টিস ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর কেনু আহম্মেদ।

উল্লেখ্য যে,

আগুনে বস্তির দুই শতাধিক ঘর পুড়ে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত হতাহত হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্মকর্তারা জানান, রূপনগরের রজনীগন্ধা অ্যাপার্টমেন্টের পেছনে ‘ট’ ব্লক বস্তিতে সকাল পৌনে ১০টার দিকে আগুন লাগে। সেখানে বাঁশ ও টিনের একটি ছাপরাঘরে প্রথমে আগুন লাগে। সেখান থেকে অন্য ঘরগুলোয় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, আগুন লাগলে বস্তির বাসিন্দারা ঘর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে যান। কিন্তু তাঁরা কোনো মালামাল ঘর থেকে বের করে নিতে পারেননি। আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। পরে আরও ইউনিট যোগ দেয়। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রূপনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দীপক কুমার দাশ বলেন, আগুনে দুই শতাধিক ঘর পুড়ে গেছে। হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। ফায়ার সার্ভিস আগুন পুরোপুরি নেভানোর চেষ্টা করছে। দীপক দাশ আরও বলেন, এই বস্তিতে মূলত রিকশাচালক, দিনমজুর, পোশাক কারখানার কর্মীদের মতো নিম্ন আয়ের লোকেরা থাকেন। আগুন লাগার সময় তাঁদের অনেকেই কর্মস্থলে ছিলেন। আগুন লাগার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে এসে বস্তিবাসীর তোপের মুখে পড়েন ফায়ার সার্ভিসের কয়েকজন কর্মী। তারা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ তোলেন।

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস ও মেইনটেনেনস) লে. ক. জিল্লুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগীরা সব হারিয়ে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলো। পরে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা কাজ চালিয়ে গেছি।

বৈদ্যুতিক শট সার্কিট থেকে আগুনের উৎপত্তি হতে পারে, এমন ধারনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদেরকে ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিষয়গুলো নিশ্চিত হওয়া যাবে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, বস্তিজুড়ে ছড়ানো ছিটানো গ্যাস-বিদ্যুতের লাইন। যে কোন কারণে আগুন লাগলেও অবৈধ এসব গ্যাস লাইনের কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। এছড়া, প্রত্যেকটা ঘর একটার সঙ্গে আরেকটা লাগানো, পানির সংকট থাকায় আগুন নেভাতেও বেগ পেতে হয়েছে।