Logo

১৮ মাসে ১৫ বার সেরা পুলিশের পুরষ্কার জিতলেন ওসি শাহ কামাল আকন্দ

অনিন্দ্য বাংলা
শনিবার, মার্চ ৭, ২০২০
  • শেয়ার করুন

“মুজিব বর্ষের অঙ্গিকার- পুলিশ হবে জনতার” এ শ্লোগানকে উজ্জিবীত করে, পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা সমুন্নত রাখতে দেশব্যাপী ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মাদক, সন্ত্রাস, চুরি ডাকাতি, খুনসহ নানা অপরাধ বিরোধী অভিযান চালিয়ে বিশেষ সফলতায় ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি (ডিবি) শাহ কামাল আকন্দ ১৮ মাসে ১৫ বার সেরা পুলিশের পুরস্কার পেলেন। শ্রেষ্ঠ উদ্ধারকারী ইউনিট, গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উৎঘাটন, দায়িত্বশীলতায় দক্ষ টিম লিডার হিসাবে তিনি এ পুরস্কার লাভ করেন।

মঙ্গলবার ময়মনসিংহ পুলিশ লাইন্স কনফারেন্স মিলনায়তনে পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহমার উজ্জামান এ পুরস্কার তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির, জয়িতা শিল্পী, আল আমিন, হাফিজুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ ।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তথ্যে জানা যায়, মুক্তাগাছায় গণধর্ষণ মামলা, শহরের রহমতপুরে জোড়া খুন মামলা, কোতোয়ালী থানার দুটি দুঃসাহিসক চুরি মামলা, কোতোয়ালি ও নান্দাইলের ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলা, নগরীর ক্যালকাটা জুয়েলার্সের অভিযোগ, ফুলপুরে হত্যা মামলা, ভালুকায় সোহাগ আত্নহত্যার মূল রহস্য উৎঘাটন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেফতার করে বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করেন।

গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ অভিযানে এবছর জানুয়ারী মাসে ৪ হাজার ৮৫০ পিচ ইয়াবা, ২২৫ গ্রাম হেরোইন, ৭ কেজি ১২৫ গ্রাম গাঁজা, ২৫ বোতল ফেনসিডিল, একশত লিটার চোলাই মদ ও ৫বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার এবং ৮ জুয়াড়িকে গ্রেফতার করা হয়।

এছাড়া সাধারণ ডায়েরীতে ৪জন অপহৃত ও খোয়া যাওয়া ৩৫টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। একই সাথে ৫৬টি মামলা দায়ের ও ৪৪ মামলা, ৮টি পাবলিক পিটিশন নিষ্পত্তি করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় নিষ্পত্তি করা হয় এবং ১১জনকে নিবারণমূলক গ্রেফতার করে।

পরপর ১৫ বার পুরষ্কারপ্রাপ্ত ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দ এক আলাপচারিতায় অনিন্দ্যবাংলাকে জানান, ডিবি পুলিশের এ সফলতা তার একার কৃতিত্ব নয়। পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের চৌকস একটি টিম বিশেষভাবে কাজ করছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই এই সফলতা আসছে। ডিবি অফিস হবে সাধারণ মানুষের কাছে সেবার প্রাণকেন্দ্র এই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি। পুলিশ জনতা আর জনতাই পুলিশ, কমিউনিটি পুলিশের এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নতুন প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য ময়মনসিংহ নগরী ও উপজেলা গড়ার জন্য সর্বো”চ চেষ্টা করবো। বন্ধুর মতোই জনগনের পাশে থেকে আমি জনগনের জানমালের নিরাপত্তা দিতে চাই। সকলের সহযোগিতা ও ডিবি সকল ষ্টাফদের সাথে নিয়ে একযোগে কাজ করতে চাই। তিনি পুলিশ সুপারসহ ডিবির প্রত্যেক সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য ওসি শাহ কামাল আকন্দ এর আগে ১৪ বার জেলা ও রেঞ্জে শ্রেষ্ঠ ওসি হিসাবে পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়েছেন।

নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ কামাল আকন্দ পিপিএম (বার) যোগদানের পর থেকে পুলিশী তৎপরতায় জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। বিশেষ করে মাদক, চোরাচালান, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ ও সন্ত্রাসী তান্ডব, ইভটিজিং প্রতিরোধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে ডিবি অফিসকে জনগণের সেবা কেন্দ্রে পরিণত করেছেন ।

চল যাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে, এই শ্রোগানকে সামনে রেখে ময়মনসিংহ নগরীসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চলছে মাদকের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দিন রাত মাঠে নেমে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। জামাত শিবির ও জঙ্গীরা দেশের অগ্রগতিতে যাতে কোনভাবে বাঁধা-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেই ব্যাপারে অটঁল ভূমিকায় রয়েছেন ওসি শাহ্ কামাল আকন্দ। তাছাড়া ময়মনসিংহে বিভিন্ন আপরাধে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক ইস্যুকৃত গ্রেপ্তারি পরোয়ানার নামের তালিকা ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ব্যানার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন । ফলে অপরাধী আসামীরা গ্রেফতার এড়াতে আদালতে আত্মসমর্পণ করে থানায় রিকল জমা দিয়ে পুলিশের হয়রানী থেকে বিরত থাকতে সুযোগ পাচ্ছে পাশাপাশি ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীদের গ্রেফতার করতে এলাকাবাসী সহযোগিতা করতে পারছে।

পুলিশ বাহিনী কতৃক চলমান এই শুদ্ধি অভিযানে ময়মনসিংহ থেকে অনেককাংশে দূর হয়েছে চুরি, চিনতাই, কমে গেছে মাদক ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন অপরাধীর সংখ্যা। তিনি উপজেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি, সামাজিক অবক্ষয়, যৌতুক ও বাল্য বিয়ে রোধ, মাদক, জঙ্গিবাদ বিরোধী জনমত সৃষ্টিসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন।