• প্রথমেই গানপয়েন্টে নেওয়া হয় জাহাজের মাস্টার-সেকেন্ড অফিসারকে
• পানি সাশ্রয়ে সপ্তাহে দুই দিন গোসল করতেন নাবিকরা
• পানি ছিঁটিয়ে জলদস্যুদের স্পিডবোট সরানোর চেষ্টা করা হয়
• জলদস্যুরা ব্রিজে আসার পর হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন ২৩ নাবিক
• জলদস্যুরা ভেবেছিল জাহাজের সবাই ভারতীয়
• ১৬ মার্চ থেকে রুটিন কাজ শুরু করেন নাবিকরা
১২ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টা। সোমালিয়া উপকূল থেকে বেশ দূর দিয়ে আরব আমিরাতের লক্ষ্যে ছুটছে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজের দীর্ঘযাত্রায় ক্লান্তি ভর করেছিল ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খানের চোখে। এর মধ্যেই কয়েকবার জাহাজের গতি ও দিক পরিবর্তনের বিষয়টি নজরে আসে তার। দ্রুততার সঙ্গে তিনি যখন পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছিলেন, তখনি জাহাজের বিপদ সংকেত সাইরেন বেঁজে ওঠে।
বিপদ আঁচ করতে পেরে যখন নাবিকরা জাহাজের সিটাডেলে (সুরক্ষিত কক্ষ) আশ্রয় নেওয়া চেষ্টা করছিলেন, তখনি মাইকে নির্দেশ আসে সবাইকে ব্রিজে যাওয়ার। ভয়ার্ত নাবিকরা জাহাজের ব্রিজে গিয়ে দেখেন এরই মধ্যেই জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ ও সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে গানপয়েন্টে নিয়েছে জলদস্যুরা।
‘জলদস্যুদের আসতে দেখেই সঙ্গে সঙ্গে অ্যালার্ম দিই এবং সবাই ব্রিজে চলে যায়। তখন ক্যাপ্টেন স্যার আর জাহাজের দ্বিতীয় কর্মকর্তা সেখানে ছিলেন। এরপর আমরা এসওএস (জীবন বাঁচানোর জরুরি বার্তা) করলাম। ইউকে এমটিওতে (যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন) যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। তারা ফোন রিসিভ করেনি।’— এমভি আবদুল্লাহর প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ খান
নিজেদের জিম্মিদশার শুরুর দিকের ঘটনা এভাবেই জাগো নিউজের কাছে বর্ণনা করেছিলেন এমভি আবদুল্লাহর ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে তার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।
ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান বলেন, ‘দুইজন ছাড়া বাকি সবাইকে সিটাডেলে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু দস্যুরা অতি দ্রুততার সঙ্গে জাহাজে উঠে সেকেন্ড অফিসারকে জিম্মি করে ফেলে। তখন আমরা সিটাডেলে না গিয়ে ব্রিজে চলে যাই। জলদস্যুরা তখন ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। ঠিক ওই মুহূর্তে মনে হয়েছিল, আর বেঁচে ফেরা হবে না, দেখা হবে না মায়ের মুখ।’
নাবিকের জিম্মিদশার ভয়ঙ্কর প্রথম কয়েক ঘণ্টার বিবরণ উঠে এসেছে এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ ও প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ খানের বর্ণনায়ও।
মতামত লিখুন :