Logo

অন্যের ভালোলাগার জন্যইতো পোশাক পরি!

অনিন্দ্য বাংলা
শুক্রবার, এপ্রিল ৫, ২০২৪
  • শেয়ার করুন

এই মুহূর্তে ছোট পর্দায় কোজাগরী বসুর চরিত্রে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। ছেলে, মেয়ে, বৌমা, জামাই নিয়ে ভরা সংসার তাঁর। তবে সামনেই পয়লা বৈশাখ। সেই নিয়ে চূড়ান্ত ব্যস্ততা ‘জল থই থই ভালবাসা’ সিরিয়ালের সেটে। বাংলা নববর্ষে কোজাগরীর বাড়িতে আসবেন একঝাঁক অতিথি। এর মাঝেই আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে মুড়ি-আলুর দম খেতে খেতে আড্ডা দিলেন অপরাজিতা আঢ্য। পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপনের পরিকল্পনা থেকে ধারাবাহিকের সেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটানোর মুহূর্ত, নিজের সংসার জীবন, টলিপাড়ার বিয়ে বিতর্ক থেকে শাড়ি বিতর্ক— নিজের অবস্থানের কথা জানালেন অভিনেত্রী।

প্রশ্নকোজাগরীর সংসারে জোরকদমে পয়লা বৈশাখের প্রস্তুতি চলছে অপরাজিতার পরিকল্পনা কী?

অপরাজিতা: হ্যাঁ, কোজাগরীর সংসারে তো প্রস্তুতি চলছেই। কিন্তু আমার সংসারে তথৈবচ অবস্থা। আমার তো ১৪ জনের সংসার। এ ছাড়াও উৎসবের দিনগুলোতে আরও বন্ধুরা আসে। তবে এ বার আমার স্কুলের বন্ধুদের রিইউনিয়ন হবে। কেউ নেপাল থেকে আসছে, কেউ আবার দিল্লি থেকে। বন্ধুরা বহু বছর পর একজোট হচ্ছি। দুপুরে খাওয়াদাওয়া করব, আড্ডা হবে। তাই ওই দিন কোনও কাজ রাখছি না।

প্রশ্ন: সিরিয়ালে আপনি ভাল শাশুড়িবাস্তব জীবনে শাশুড়িবৌমার সম্পর্ক ভাল থাকে কোন গুণে?

অপরাজিতা: আমার কেরিয়ারের বয়স ২৮। আমার বিবাহিত জীবন ২৭ বছরের। বিয়ে হয়ে ১৪ জনের সংসারে আসি। বর্তমানে শ্বশুর ও দিদিশাশুড়ি মারা যাওয়ার পর সদস্য সংখ্যা ১২। এই পেশায় থেকে ১২ জনের একান্নবর্তী পরিবারে এত বছর ধরে আমি আছি। আমার মনে হয়, বিয়ে মানে কোনও ভাল লাগা নয়, কোনও ভালবাসা নয়। বিয়ে মানে লাভ নয়, বিয়ে মানে দায়িত্ব। তুমি যদি দায়িত্ব নিতে পারো, তোমার দায়িত্বও সবাই নেবে। বিয়ের পর থেকেই এই কথাটা মাথায় ঢুকিয়ে নিয়েছি। আসলে যখন আমার বিয়ে হয়, সেই সময় আমার সংসার এত বড় ছিল না। তিন জনের পরিবার। শ্বশুর রাইটার্সে চাকরি করতেন, শাশুড়ি মা চাকুরিরতা ছিলেন। স্বামী তো এই ইন্ডাস্ট্রির মানুষ। আমি দেখতাম যে যাঁর মতো বাড়িতে আসে, খায়-দায় ঘুমিয়ে পড়ে। এ দিকে আমি যে হেতু ছোট থেকেই একান্নবর্তী পরিবারে বড় হয়েছি, বিয়ের পরেও মনে হয়েছিল এটা কোনও সংসারই নয়। একটা সংসার তৈরি করতে হবে। তখনই খুড়শ্বশুর, ননদ সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে থাকা শুরু করি। দায়িত্বের সঙ্গে তৈরি হয় অভ্যাস।

প্রশ্ন: ব্যক্তিগত জীবনে শাশুড়ির সঙ্গে আপনার সুসম্পর্কের কথা এখন অনেকেই জানে

অপরাজিতা: আসলে উনি আমার জীবনের যশোদা মা। আমার যেখানেই বিয়ে হোক না কেন, শাশুড়ি জীবনে না এলে আমার কিছুই হত না। তেমনই ওঁর কাছে ভগবান বলো, বিশ্বাস বলো, ভালবাসা সবটাই ‘মনা’ (অপরাজিতার ডাকনাম)। একটা বয়সে এসে মানুষের আত্মবিশ্বাস টলে যায়। সেই সময় আমি ওঁকে ভরসা দিয়েছি। এখনও তিনি সারা পৃথিবী একা ঘুরে বেড়ান। আমি মনে করি, কারও চলে যাওয়া অন্য কারও জীবনের প্রতিবন্ধকতা হতে পারে না। এক সময় সবাইকে চলে যেতে হবে। তার মানে আমাদের থেমে থাকলে হবে না। আমি যখন শাশুড়িকে স্মার্ট ফোন এনে দিই, সে সময় আমার বর ভেবেছিল শাশুড়ি হয়তো সেটা ব্যবহার করতে পারবেন না। আমি বলেছিলাম, ‘‘মা তোমার-আমার থেকে বেশি স্মার্ট।’’ আমার শাশুড়ি রোজ সকালে ৬ টায় ঘুম থেকে ওঠেন। আমি শুটিং না থাকলে ১১টায় উঠি। ওঁর দায়িত্ববোধ আমার থেকে অনেক বেশি। আমার শাশুড়ি বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দেন, হইহই করেন, বিয়ার খান। আমি বলি, বেশ করেছ।

প্রশ্নআজকাল তো প্রেম ভাঙাবিয়ে ভাঙা অনেকটাই জলভাত পারফেক্ট রিলেশনশিপ’-এর কোনও সংজ্ঞা হয় কি?

অপরাজিতা: আমরা ‘পারফেকশন’ খুঁজতে গিয়ে গোলমালটা করে বসি। এই জীবন, প্রকৃতি কোনও কিছুই কি নিখুঁত? আসলে আমরা ভালবাসি যখন-তখন, কোনও মানুষের গুণ দেখে। কিন্তু ভালবাসি বলেই কোনও মানুষের শর্তাধীন নই। একে অপরের মর্জি মতো চলা, বা সারাক্ষণ পছন্দ-অপছন্দ মাথায় নিয়ে চলা মানে তো চুক্তির মতো। আমি যদি আশা করে থাকি আমার বর হৃতিক রোশনের মতো দেখতে হবে, তা হলে তো আমার সংসারে অশান্তি হবে। সে তার মতো করে সুন্দর করে বাঁচবে। আমিই তাকে সাহায্য করব।