Logo

ময়মনসিংহে প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার পেলেন ২৮৭ ভূমিহীন পরিবার

অনিন্দ্য বাংলা
বৃহস্পতিবার, জুলাই ২১, ২০২২
  • শেয়ার করুন

মজিবুর রহমান শেখ মিন্টু : মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের আওতায় সারাদেশে আরও ২৬ হাজার ২২৯ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের কাছে ঘরের দলিল ও চাবি হস্তান্তর করেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় ময়মনসিংহে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেলেন ২৮৭ ভূমিহীন পরিবার। এর ফলে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা, নান্দাইল, ফুলবাড়ীয়া ও ফুলপুর উপজেলা সম্পূর্ণভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হলো।

ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হকের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার সকালে চর ভেলামারী আশ্রয়ণ প্রকল্পে নান্দাইল উপজেলার সাংসদ আনোয়ারুল আবেদীন তুহিন, বিভাগীয় কমিশনার শফিকুল রেজা বিশ্বাস, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, জেলা পুলিশ সুপার আহমারউজ্জামান, ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, নান্দাইল উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ আহমেদ, পৌর চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ভুইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির উদ্দিন, রাজনৈতিক নেতারা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ময়মনসিংহে ৩য় পর্যায়ে ২য় ধাপে ১১টি উপজেলায় ২৮৭টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিটি গৃহ ২ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত, কবুলিয়ত ও রেজিস্ট্রেশন এবং জমিসহ সেমিপাকা গৃহ উপকারভোগী পরিবারের কাছে জমির দলির খতিয়ান প্রদান করা হয়েছে। ঘর পেয়ে উপকারভোগিরা আপনার জন্য দোয়া করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন ৫২টি উপজেলায় কোন ভূমিহীন গৃহহীন নেই । ৪৯২টি উপজেলায় ২৬,২২৯টি গৃহ হস্তান্তর করা হয়েছে। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে অবশিষ্ট ১৪০৩টি গৃহ প্রদানের মাধ্যমে পুনর্বাসন সমাপ্তি হবে।

প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি জেলার পাঁচটি স্থানে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের কাছে ঘর হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি যুক্ত হন ৫টি প্রকল্প এলাকার সঙ্গে।  প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তথ্যমতে স্থানগুলো হচ্ছে- লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলাধীন চর কলাকোপা আশ্রয়ন প্রকল্প, বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলাধীন গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকল্প, ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলাধীন চর ভেড়ামারা আশ্রয়ণ প্রকল্প, পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড় সদর উপজেলাধীন মহানপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প ও মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলাধীন জাঙ্গালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প।

এদের মধ্যে লক্ষ্মীপুরে ৪৩৬টি, বাগেরহাটে ৫০০টি, ময়মনসিংহে ২৪টি, পঞ্চগড়ে ২ হাজার ৪৩৪টি ও মাগুরায় ৬৭৮টি ঘর জমিসহ হস্তান্তর করা হয়। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভূমিহীন ও গৃহহীন ভুক্তভোগী দুইজন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং তাকে ময়মনসিংহ আশ্রয়ণ প্রকল্পে আসার আমন্ত্রন জানান ।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আশ্রয়ণ একটি মানুষের ঠিকানা। জীবন-জীবিকার একটি সুযোগ, বেঁচে থাকা, স্বপ্ন দেখা এবং তা বাস্তবায়ন করার। যে বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, সে বাংলাদেশের কোনও মানুষ যেন ঠিকানাবিহীন না থাকে, তাদের জীবনটা যেন অর্থহীন হয়ে না যায়, তাদের জীবনটা যেন সুন্দর হয়, সেই লক্ষ্য নিয়েই এই উদ্যোগটা সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধু নিয়েছিলেন। তাঁরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাঁর হাতে গড়া বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষের জন্য অন্তত বসবাসের একটি জায়গা করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই এই আশ্রয়ণ।

মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা ছিল ‘একটি মানুষও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না।’ এই লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি জমির মালিকানাসহ ৬৩ হাজার ৯৯৯টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০ জুন জমির মালিকানাসহ ৫৩ হাজার ৩৩০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণ করা একক ঘরের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত বরাদ্দকৃত ঘরের সংখ্যা ১ লাখ ৮৫ হাজার ১২৯টি। ওই অর্থবছর পর্যন্ত একক ঘরের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ৪ হাজার ২৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

চলমান তৃতীয় পর্যায়ে মোট বরাদ্দকৃত একক ঘরের সংখ্যা ৬৭ হাজার ৮০০টি, যার মধ্যে গত ২৬ এপ্রিল হস্তান্তরিত হয় ৩২ হাজার ৯০৪টি। আজ হস্তান্তর হবে ২৬ হাজার ২২৯টি। এছাড়া আরও নির্মাণাধীন রয়েছে ৮ হাজার ৬৬৭টি ঘর।