Logo

রুবীনা আজাদের ৩টি কবিতা

অনিন্দ্য বাংলা
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১১, ২০২৪
  • শেয়ার করুন

রুবীনা আজাদের ৩টি কবিতা

১. বিপরীত স্রোত
বাতাসের স্রোতে লেখা গান ভেসে যায় বহুদূর
বেহালাটা পড়ে থাকে, নক্ষত্রের ভীড়ে বাজে সুর।
ঘরের বন্ধন খুলে ঘরছাড়া হয়ে ফেরে যারা
প্রশস্ত পথের খোঁজে দিগন্তের সবুজাভ পাড়া
পার হয়ে জীবনের বাঁক মুছে দেয় চিরদিন।
বিচলিত অশ্রুদাগে ছায়া ফেলে অলিখিত ঋণ।
অন্তর্গত দাবদাহে পুড়ে যায় সজীব সময়
অনিবার্য পতনের বিপরীতে নিখাদ অভয়।
শুশ্রূষা কখনো মেলে অস্তগামী জীবনের পালে ।
সাহসীরা জিতে যায় বিষপানে কোনো কালে
জনপদে উড়ে আসে নামহীন ফুলের পরাগ।
খেয়াঘাটে ভোর হয়, তীরে লাগে বৈঠাদের দাগ।
সূর্যের উত্তাপ চির পুরাতন নীলিমায় জ্বলে,
ধুলোর পৃথিবী বাঁচে গানভরা স্বপ্নের দঙ্গলে।
২. ভুল সম্পর্ক
ভালোবাসার সরল গল্পগুলো আহত উদ্যানে
বিশ্বাসের বর্ণমালা মুছে গেছে চেনা অভিধানে !
বুকের তলায় জমা হালখাতায় লেখা অবসাদ,
আদিম ঈর্ষায় পোড়ে স্বরচিত ভুল অনুবাদ!
যাপিত সম্পর্কগুলো কেবলই কি প্লাস্টিক ফুল?
নয় কিছু বেশি তার! মুগ্ধতার সবটুকু ভুল?
সুরভি ছিল না তাতে একেবারে, অনর্ঘ্য রঙিন!
ধুলোর প্রলেপে শুধু দিন দিন হয়েছে মলিন!
সঞ্চিত আগুনে বোনা কারুকাজ রুমালের কোণে
অরণ্যের অন্ধকার ঢের ভালো স্বেচ্ছানির্বাসনে।
অনুতাপ-রৌদ্রজলে ধুয়ে যাক রূঢ় অবহেলা
বনবাসী পাখিদের ভাষা শিখে কেটে যাবে বেলা,
কখনো গায়নি যারা ভুল সুরে বিরহের গান।
লোকালয়ে বিবসনা দারিদ্রের হোক অবসান।
৩. ছেলেটা ও মেয়েটা
মেয়েটার        ঠোঁটের কোণে তিল ছিল
চোখে তার     একটা আকাশ নীল ছিল
মেয়েটার        কানে ঝুমকো দুল ছিল
বেণীটার         গোড়ায় গোঁজা ফুল ছিল।
ছেলেটার        মুগ্ধতা আর ঘোর ছিল
মনে তার         লক্ষ্য জয়ের জোর ছিল
ছেলেটার        অপেক্ষাতে সুখ ছিল
হাতে তার       গোলাপ, হাসিমুখ ছিল।
ছেলেটার        দেখার বড় সাধ ছিল
মেয়েটার         দ্বিধার প্রাচীর বাঁধ ছিল
মেয়েটার          লজ্জানত চোখ ছিল
ছেলেটার         দুচোখ অপলক ছিল।
মেয়েটার           ঠোঁট দুটি থরথর ছিল
ছেলেটার          কথার শ্রাবণ ঝরছিল
মেয়েটার           সব হারাবার ডর ছিল
ছেলেটির          বাহুর বাঁধন-ঝড় ছিল।
মেয়েটার          এই ছেলেটাই ধ্যান ছিল
ছেলেটার          এই মেয়েটাই জ্ঞান ছিল।