Logo

সাহেদের বড়ই স্বপ্ন ছিল এমপি-মন্ত্রী হওয়ার

অনিন্দ্য বাংলা
শনিবার, জুলাই ১৮, ২০২০
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক: করোনার নমুনা পরীক্ষা নিয়ে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের মন্ত্রী-এমপি হওয়ার স্বপ্ন ছিল।

গ্রেপ্তারের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থাকাকালে জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সমকালকে জানিয়েছেন।

তারা জানান, গ্রেপ্তারের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থাকাকালেও প্রতারক সাহেদের দাম্ভিকতা কমেনি। এত এত কুকর্ম করলেও সে জন্য তার বিন্দুমাত্র অনুতাপও নেই। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সাহেদ বলেন বলেন, ‘একজন সম্পাদক ও প্রকাশককে এভাবে নাজেহাল করা ঠিক হয়নি।’ নিজেকে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দাবি করে তিনি জানিয়েছেন, মন্ত্রী-এমপি হওয়ারও স্বপ্ন ছিল তার।

তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানান, বিএনপির একজন নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথা সাহেদ স্বীকার করেছেন। পরে আওয়ামী লীগের অনেকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথা জানান। রাজনীতিক নেতা হয়ে ওঠার বড় স্বপ্ন ছিল তার।

সাতক্ষীরায় গ্রেপ্তারের পরপরই সাহেদ কী বলেছিলেন- জানতে চাইলে র‌্যাবের এক কর্মকর্তা জানান, ধরা পড়ার মুহূর্তে ভারী কণ্ঠে সাহেদ বলছিলেন, ‘আমি একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। পত্রিকার মালিক। আমার রাজনৈতিক পরিচয়ও আছে।’ পরে সাহেদ আরও বলেন, ‘নিয়মিত টক শো করি। আমি সাভারের রানা প্লাজার রানা নই। আমাকে রানা বানানো ঠিক হবে না। আমার কাজের জন্য অনুতপ্তও নই।’

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, কর্মজীবনে তিনি অনেক ধরনের প্রতারক ও অপরাধীকে সামলেছেন। কিন্তু সাহেদের মতো এত ধূর্ত লোক দেখেননি। তার মাথায় ‘ক্রিমিনাল বুদ্ধি’ গিজগিজ করে। সব বিষয় নিয়েই তার মতো করে যুক্তি দেন সাহেদ।

একাধিক নির্ভরশীল সূত্র সমকালকে জানায়, গ্রেপ্তারের আগে একটি ভাড়া গাড়িতে সাতক্ষীরা যান সাহেদ। সেখানে তিনি তার এক আত্মীয়ের বাসায় ওঠেন। রাতেই ওই আত্মীয়ের বাসায় খাওয়া-দাওয়া করেন। তবে সাহেদের মামা তাকে সেখানে আশ্রয় দিতে চাননি। বুধবার ভোররাতে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সাহেদ স্থানীয় বাচ্চু মাঝির সঙ্গে অবৈধ একটি সিম দিয়ে যোগাযোগ করেন। বাচ্চু মাঝি তাকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

জানা গেছে, সাহেদদের আদিবাড়িও পশ্চিমবঙ্গে। বাচ্চু মাঝি আগে থেকেই তার চেনাজানা ছিল। দীর্ঘদিন অবৈধপথে লোক আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে সীমান্তে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে বাচ্চু মাঝির। লবঙ্গবাতি খাল হয়ে ইছামতী নদী হয়ে ভারতে পালানোর ছক ছিল সাহেদের।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকা থেকে অস্ত্রসহ সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।