অন্যান্য খবর অর্থনীতি

দুই উপদেষ্টার সহকারীর নামে দুর্নীতির পাহাড়!

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ২৪-৪-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০২৮

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেনসহ স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা তুহিন ফারাবী ও ডা. মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার তদবির বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

গোপন সূত্রে জানা গেছে, সরকারি বিভিন্ন পদে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্যের মাধ্যমে এরা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অভিযুক্তরা স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, গণপূর্ত, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে ঘুরে ঘুরে ঠিকাদারি কাজ ও কর্মকর্তাদের বদলির তদবির করতেন।

বিশেষ করে মোয়াজ্জেম হোসেন, তার পদে বসেই ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রকৌশলী বদলি, ঠিকাদারি বরাদ্দ এবং বিভিন্ন কমিশন বাণিজ্যে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সচিবালয়ে দিনের বেলা নয়, বরং বিকাল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ছিলেন সবচেয়ে সক্রিয়।

একইভাবে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার দুই ঘনিষ্ঠ ছাত্র প্রতিনিধি তুহিন ফারাবী ও ডা. মাহমুদুল হাসান চিকিৎসক, সিভিল সার্জন, মেডিকেল কলেজের পরিচালক নিয়োগে ১৫ থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নার্স ও মিডওয়াইফ বদলিতেও তারা ২ লাখ টাকা পর্যন্ত নিতেন।

সূত্র জানায়, তদবির বাণিজ্যের অভিযোগের ভিত্তিতে ২১ এপ্রিল সরকারি আদেশে মোয়াজ্জেম হোসেন ও তুহিন ফারাবীকে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অপরদিকে ডা. মাহমুদুল হাসান বর্তমানে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন এবং তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

মোয়াজ্জেম হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, “আমি পদত্যাগ করেছি, আমাকে অপসারণ করা হয়নি। আমি সরকারি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি, সে কারণেই সরে দাঁড়িয়েছি।” তবে ৪০০ কোটি টাকার তদবির বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “আমি এক টাকার দুর্নীতি করেছি—এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না।”

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মাহমুদুল হাসান আগেও রাশিয়ায় বসবাস করতেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশে ফিরে তুহিন ফারাবীর সহায়তায় মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ পান তিনি। এরপর থেকেই বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্যে সক্রিয় হন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি হাতিয়ে নেওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ রাশিয়ায় পাচার করেছেন।

অন্যদিকে তুহিন ফারাবীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হলেও মাহমুদ এখনো কোনো ধরনের ব্যবস্থা ছাড়াই বহাল আছেন, যা প্রশাসনিক পর্যায়ে প্রশ্ন তুলেছে।