বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ঘর হস্তান্তর করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বুধবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি উপকারভোগীদের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেন।
নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও ফেনী জেলার উপকারভোগীরা ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন। প্রতিটি জেলা থেকে একজন করে উপকারভোগী তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বন্যা শুরু হয়। এটা কোনো স্বাভাবিক বন্যা ছিল না—পুরোপুরি ভিন্ন ধরণের দুর্যোগ ছিল। কেমন ক্ষতি হবে, কতটা স্থায়ী হবে—তা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল। দিন যত গড়িয়েছে, পরিস্থিতি ততই জটিল হয়েছে।”
ড. ইউনূস বলেন, “বন্যায় ঘর হারানো মানুষদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। প্রাথমিকভাবে বাড়ি নির্মাণে অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু আমি সে প্রস্তাবে সায় দিইনি, কারণ টাকা দিলে সেটার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা কঠিন। অনেক সময় প্রাপ্য মানুষ সেই টাকা পায় না, ভাগ-বাটোয়ারা হয়ে যায়।”
তিনি আরও জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর নির্মাণের প্রস্তাব আসার পর যখন জানলেন যে এ প্রকল্প সেনাবাহিনী বাস্তবায়ন করবে, তখনই আস্থা ফিরে পান। “আমি নিশ্চিত হতে পেরেছি যে বরাদ্দকৃত টাকা যথাযথভাবে ব্যবহার হয়েছে এবং ঘরের গুণগতমানও ভালো,” বলেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, “আমরা যে পরিমাণ টাকা দিয়েছিলাম, তার অর্ধেক খরচেই ঘর নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। এটা আমাদের জন্য এক ধরনের আনন্দের খবর।”
তিনি আরও বলেন, “বন্যার সময় যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, তা অভূতপূর্ব। তখন আমরা বুঝিনি—বন্যার প্রকৃত গভীরতা কী ছিল। পরে বোঝা গেছে, এটি একটি ভয়াবহ দুর্যোগ ছিল।”
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ এই আবাসন প্রকল্পের আওতায় বন্যাকবলিত এলাকায় শত শত ঘর নির্মাণ করে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় আরও কিছু জেলার জন্য নতুন পর্যায়ের কাজ চলমান রয়েছে।