ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমআইএস ডিপার্টমেন্টের কনফারেন্স হলে ১৯তম বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের ‘বহুপক্ষীয় ডিজিটাল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ’ বিষয়ক একটি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে আইসিটি ও টেলিকম বিভাগের নীতি উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “ফেসবুক এবং গুগলের সার্ভার দেশে আনার চেষ্টা চলছে। সার্ভারগুলো দেশে না থাকার কারণে ইন্টারনেট ব্যবহারে নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশে সিডিএন সার্ভার এবং ডিপ প্যাকেট ইন্সপেকশন সার্ভারের অভাব রয়েছে, ফলে ইন্টারনেটের ওপর যথাযথ সভরেন্টি বা নিয়ন্ত্রণ নেই।”
এছাড়া, তিনি দেশের ডিজিটাল ভবিষ্যতের জন্য আরও সময়োপযোগী ফ্রেমওয়ার্ক গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং নাগরিক আপত্তি সম্মান জানিয়ে কিছু বিষয় সংশোধিত হয়েছে বলেও জানান।
বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের (বিআইজিএফ) চেয়ারম্যান আমিনুল হাকিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. খলিলুর রহমান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সাইদ মো. কারুজ্জামান, এপনিকের ইন্টারনেট রিসোর্স অ্যানালিস্ট সুবহা শামারুখ, আন্তর্জাতিক সেন্টার ফর নট ফর প্রফিট ল’র শারমিন খান, আন্তর্জাতিক ক্রাইমস ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর সাইমুম রেজা তালুকদার এবং আবদুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
প্যানেল আলোচনায় ডেইলি স্টারের সিনিয়র রিপোর্টার জাইমা ইসলাম বলেন, “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ছিল ব্যর্থ, কারণ এটি জনগণের অধিকার ও জাতীয় নিরাপত্তা—এই দুই বিষয়কে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল।” তিনি অভিযোগ করেন, বিগত সরকার ইন্টারনেটের মাধ্যমে মানুষকে দমন করার জন্য এ আইনকে বড় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিল।
প্রধান অতিথি হিসেবে বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. খলিলুর রহমান বলেন, “আইন নয়, গাইডলাইন এবং সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে ইন্টারনেটে সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।” তিনি আরও বলেন, “ইন্টারনেট এখন মৌলিক মানবাধিকার, এবং এটি কখনও বন্ধ করা যাবে না।” তিনি তরুণ, আমলা ও রাজনীতিকদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইন্টারনেটের গুরুত্ব বিষয়ে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে আমিনুল হাকিম বলেন, “ইন্টারনেট আমাদের ডিজিটাল রাইটস, এবং আইন নয়, সচেতনতা দিয়ে এ গ্লোবাল ভিলেজের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।” তিনি তরুণদের ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার বিষয়ে জানার উপর গুরুত্ব দেন।
এছাড়া, তিনি সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল (এসওএফ ফান্ড) সম্পর্কে বলেন, “দুর্গম এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে এই ফান্ড ব্যবহার করা হয়।”
এই আলোচনা সভায় বিআইজিএফ-এর মহাসচিব এম এ হক অনু সূচনা বক্তব্য দেন।