ইতালিতে বৈধভাবে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর ভবিষ্যৎ আজ নির্ধারিত হতে পারে। আজ (৫ মে) দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতেও পিয়ান্তেদোসি। তার এ সফরে বৈধ অভিবাসন, শ্রমিক নিয়োগ এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে।
বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ইতালির একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) সইয়ের বিষয়টি। মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল পৌনে ১০টায় ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে এ চুক্তি সই হবে। এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ থেকে পর্যায়ক্রমে লক্ষাধিক দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী ইতালিতে পাঠানোর পথ সুগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, বৈধ অভিবাসনের পথ তৈরি করতে বাংলাদেশ ও ইতালি যৌথভাবে কাজ করছে। ইতালি ইতোমধ্যে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়া বাংলাদেশিদের সংখ্যা ও মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন। এ কারণেই দীর্ঘমেয়াদি কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনায় এসেছে ইতালি।
অন্যদিকে, ইতালি যেতে আগ্রহী বহু বাংলাদেশি কর্মী মাসের পর মাস ধরে ভিসার অপেক্ষায় রয়েছেন। ইতালির দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, ভিসা প্রক্রিয়ায় বিলম্বের অন্যতম কারণ আবেদনকারীদের জমা দেওয়া ভুয়া নথিপত্র। যাচাই-বাছাই জটিল হওয়ায় সময় বেশি লাগছে।
ভিসা প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান ভিএফএস গ্লোবাল জানিয়েছে, অ্যাপয়েন্টমেন্ট প্রক্রিয়া ই-মেইলের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে এবং এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। তারা প্রতারক চক্র এড়িয়ে চলতে আবেদনকারীদের সতর্ক থাকতে বলেছে।
সফররত ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ বিকেলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়া পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেনের সঙ্গেও আলোচনা হবে। এ সফরে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান, আন্তর্জাতিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, প্রশিক্ষণসহ অভিবাসন ইস্যুতে বিস্তৃত আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
বর্তমানে ইতালির নতুন অভিবাসন নীতির আওতায় আলবেনিয়া হয়ে অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশ করা অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন বাংলাদেশি ওই নীতির আওতায় দেশে ফিরেছেন। এ অবস্থায় বাংলাদেশ চায়, বৈধ পথে অভিবাসনের সুযোগ বৃদ্ধি করে অবৈধ প্রবণতা রোধ করা হোক।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ইতালি বিভিন্ন দেশ থেকে ১ লাখ ৯১ হাজারের বেশি শ্রমিক নেওয়ার পরিকল্পনা করলেও বাংলাদেশ সেই তালিকায় নেই। এ কারণে দেশে ও বিদেশে থাকা বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তবে আজ শুরু হওয়া সফরে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার আশা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।