নয়াদিল্লিতে নির্বাসিত অবস্থানে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মধ্যে শিগগিরই সরাসরি সাক্ষাৎ হতে পারে। ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম নিউজ ১৮-এর খবরে বলা হয়েছে, খুব শিগগিরই ভারত সফরে যাচ্ছেন জয়। এ সফরে তার নয়াদিল্লিতে মায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি কলকাতায় যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে নিউজ ১৮ জানিয়েছে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার পর তিনি নতুন মার্কিন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন। উল্লেখ্য, জয় দীর্ঘদিন মাকে সামনাসামনি দেখেননি। ভার্চুয়াল যোগাযোগেই এতদিন দলীয় কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন তিনি।
এ সফরটি এমন এক সময় হতে যাচ্ছে, যখন বাংলাদেশে রাজনৈতিক অঙ্গন চরম টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কঠোর পদক্ষেপে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গত ১০ মে মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের সব অনলাইন ও অফলাইন কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়, দলের বিরুদ্ধে চলমান বিশেষ সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের রায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো সভা, মিছিল, সেমিনার, প্রচার বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকতে পারবে না। একইসঙ্গে ১২ মে নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করে দেয়, ফলে দলটি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ হারায়।
সজীব ওয়াজেদ জয়ের সম্ভাব্য ভারত সফর নিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাসিত নেতাদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। নিউজ ১৮-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে দলের সাবেক এক মন্ত্রী বলেন, "আমরা আশা করছি, জয় তার মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। সরকার যে পদ্ধতিতে দলটিকে নিষিদ্ধ করেছে, তা সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং গণতন্ত্রবিরোধী।"
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থান করছেন। রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে তার ভার্চুয়াল যোগাযোগও এখন বাধাগ্রস্ত।
দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত, নির্বাসিত আওয়ামী লীগ নেতাদের ভূমিকা এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ের সম্ভাব্য উদ্যোগকে ঘিরে আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নিয়ে জনমনে জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।