সকল খবর ময়মনসিংহের খবর

খালিয়াজুরীতে মারধর করে গ্রাম ছাড়া করার অভিযোগ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে!

নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ

প্রকাশ : ১২-৪-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫২৫২

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার মেন্দিপুর গ্রামের এক কৃষক পরিবারকে মারধর ও তাদের ঘরবাড়ি ভাংচুর করে গ্রাম ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি’র দুই নেতাসহ তাদের লোকজনের বিরুদ্ধে।

গত ৩ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে এ ভাংচুর ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে।

ভূক্তভোগী পরিবারের সেকুল ইসলামের অভিযোগ, মেন্দিপুর গ্রামের বাহাদুর চৌধুরীর ছেলে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জলিল চৌধুরী, মেন্দিপুর ইউনিয়ন বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক একই গ্রামের শাহ আলম চৌধুরীর ছেলে ওয়াসিম চৌধুরী এবং দৌলত হোসেন চৌধুরীর ছেলে মাশরুম ইয়ার চৌধুরী চুন্নু সাথে আমাদের পূর্ব থেকেই বিরোধ চলছিল।  এ বিরোধের জের ধরে গত ৩ এপ্রিল দুপুরে তারা ৩০-৪০ জন লোকসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও আমাদের মারপিট করে।  এ মারধরে আমি, আমার ভাই নজরুল, মা মমতা বেগম ওরফে ব্যারেস্টারের মা, বোন জেসমিনসহ ৭ জন আহত হই।  গুরুতর আহতদের মধ্যে আমরা ওই ৪ জন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করি। তিনি আরও জানান, মারধরের পর তারা আমাদের ১০ জনসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলাও দিয়েছ। বর্তমানে আমরা তাদের ভয়ে গ্রাম ছাড়া রয়েছি।  এ ঘটনায় থানায় আমাদের মামলা নেয় নাই। পরে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি।

ওই মিথ্যা মামলার ১নং আসামী আসিফ ইকবাল চৌধুরী শাকিল (৪২) জানান, আমি একজন সাধারণ ব্যবসায়ী।  আমি ব্যবসার কাজে বেশির ভাগ সময় চট্টগ্রামে থাকি। মারধরের ঘটনার সময় আমার চাচাত ভাই সুজাত চৌধুরীর বিয়েতে জেলার আটপাড়া উপজেলায় ছিলাম।  অথচ, আমার প্রতিবেশী মাশরুম ইয়ার চৌধুরী চুন্নু, জলিল চৌধুরী এবং ওয়াসিম চৌধুরী ব্যক্তিগত ও পারিবারিবারিক বিরোধের জের ধরে এবং দলীয় নাম ভাঙ্গিয়ে আমাকে আসামী করেছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় অনেকেই জানান, ৫ আগষ্টের পর থেকেই জলিল চৌধুরী এবং ওয়াসিম চৌধুরীসহ তাদের লোকজন দলীয় প্রভাব বিস্তার করে সেকুল-নজরুলদের বাড়ি-ঘর ভাংচুরসহ গ্রামের নিরীহ লোকজনদের বিভিন্নভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করে আসছে।  তাদের অত্যাচারে আমরা এখন অতিষ্ঠ।
এ বিষয়ে  জলিল চৌধুরী মুঠোফোনে জানান, এটা একটি দলীয় ঘটনা।  সেকুলরা আওয়ামী পরিবারের লোক। আমি ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।  প্রথমে তারা আমাদের উপর আক্রমণ করেছে।  মারামারিতে আমরা কয়েকজন আহত হয়েছি।  আমরা কাউকে অন্যায়ভাবে কখনো অত্যাচার করেনি বলেও দাবী করেন তিনি।

খালিয়াজুরী উপজেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুর রহমান কেষ্ট জানান, শুনেছি ৩ এপ্রিল দুপুরে বিএনপি নেতা জলিল চৌধুরী এবং ওয়াসিম চৌধুরী তার লোকজন নিয়ে প্রতিবেশী সেকুল ও নজরুলদের মারধর ও বাড়ি-ঘর ভাংচুর করেছে।  এটা দলীয় কোন ঘটনা নয়, এটি একটি পারিবারিক বিরোধ।  তাছাড়া, শাকিল ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়, শাকিল ঘটনার সময় বরের সাথে আটপাড়া উপজেলায় একটি বিয়েতে ছিল।  অথচ, তাকে আসামী করা হয়েছে।  জলিল চৌধুরী এবং ওয়াসিম চৌধুরী এসব মারধর ও মামলা করার বিষয়ে বিএনপি দলীয় নাম ভাঙ্গিয়েছে কী’না খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিঁনি।

খালিয়াজুরী থানার ওসি মকবুল হোসেন জানান, মারামারির ঘটনায় দু’পক্ষই মামলা করেছে।  আসামীরা পলাতক আছে।  তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।