ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া ফয়জুর রহমান (রহ.) বড় মসজিদ মাদ্রাসায় ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। শিশু বলাৎকারের অভিযোগে বহিষ্কৃত এক শিক্ষককে পুনর্বহাল ও সিনিয়র তিন শিক্ষকের অব্যাহতির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ (শনিবার) সকাল থেকে তিন ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, জেলা প্রশাসক ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মুফিদুল আলমের একতরফা সিদ্ধান্তে শিশু বলাৎকার মামলায় অভিযুক্ত মাওলানা আজিজুল হককে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি মোফাজ্জল হোসাইন, নায়েবে মুহতামিম মুফতি সারওয়ার হোসাইন এবং খতিব মাওলানা আব্দুল হককে অব্যাহতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে।
সকাল ১০টা থেকে নগরীর পাটগুদাম মোড় থেকে কাচারি পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তারা শিক্ষকদের পক্ষে স্লোগান দেন এবং জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তোলেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী তাওহীদুল ইসলাম ও নাজমুস সাকিব বলেন, “একটি প্রভাবশালী মহল বহিষ্কৃত শিক্ষক আজিজুল হকের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আমাদের অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলে প্রকৃত অপরাধ আড়াল করার চেষ্টা চলছে।”
তারা আরও জানান, জেলা প্রশাসক শিক্ষক ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পক্ষপাতমূলক হস্তক্ষেপ করছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি, অবিলম্বে পুনর্বহাল সিদ্ধান্ত বাতিল ও অধ্যক্ষপন্থী শিক্ষকদের অব্যাহতির প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। পরিস্থিতি যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হয়, সে চেষ্টাই করছি।”
উল্লেখ্য, জামিয়া ফয়জুর রহমান মাদ্রাসায় এর আগেও পরিচালনা কমিটিকে ঘিরে নানা বিরোধ ও আন্দোলনের ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক উত্তেজনা সেই পুরোনো দ্বন্দ্বকে নতুন করে উসকে দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।