সকল খবর বিদেশের খবর

পাকিস্তানে ট্রেনে হামলা, জিম্মি শতাধিক যাত্রী

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ১১-৩-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০০৯

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে চলন্ত একটি ট্রেনে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ৪৫০ জনের বেশি যাত্রীকে জিম্মি করেছে জঙ্গিরা। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে এই হামলার ঘটনায় ট্রেনের চালক ও কয়েকজন যাত্রী আহত হন। পরে সশস্ত্র হামলাকারীরা ট্রেনে উঠে সেটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।  

বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটার জ্যেষ্ঠ রেলওয়ে কর্মকর্তা মুহাম্মদ কাশিফ ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, ‘‘বন্দুকধারীরা চলন্ত ট্রেনটির ৪৫০ জনেরও বেশি যাত্রীকে জিম্মি করেছে।’’ জাফর এক্সপ্রেস নামের ওই ট্রেনটি বেলুচিস্তানের কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখাওয়ার পেশোয়ারের উদ্দেশে যাত্রা করছিল। ট্রেনটির ৯টি বগিতে ৪৫০ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন।  

বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার দাবিতে কয়েক দশক ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসা সশস্ত্র গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ট্রেন হামলার দায় স্বীকার করেছে। এক বিবৃতিতে বিএলএ জানিয়েছে, তারা ট্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ যাত্রীদের জিম্মি করেছে। তবে প্রাদেশিক সরকার বা রেলওয়ের কর্মকর্তারা যাত্রী ও নিরাপত্তা সদস্যদের জিম্মি করার বিষয়ে নিশ্চিত করেননি।  
বেলুচিস্তানের রেলওয়ে বিভাগের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বোলান জেলার মুশকাফ এলাকায় ট্রেনটিতে হামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পৌঁছেছেন।  

বেলুচিস্তানের সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শহীদ রিন্দ জানিয়েছেন, যাত্রীদের নিরাপদে উদ্ধারে সরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

সরকারি এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যে এলাকায় ট্রেনটি থামানো হয়েছে, সেটি পার্বত্য এলাকা হওয়ায় জঙ্গিদের জন্য আস্তানা গড়ে তোলা এবং হামলার পরিকল্পনা করা সহজ হয়েছে।  

বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। সম্প্রতি তারা প্রদেশজুড়ে বেশ কয়েকটি হামলার দায় স্বীকার করেছে। গত নভেম্বরে, বেলুচিস্তানের একটি রেলওয়ে স্টেশনে পাকিস্তানি সৈন্যদের লক্ষ্য করে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল এই গোষ্ঠীর সদস্যরা। ওই হামলায় বেসামরিক পোশাক পরিহিত ১৯ সৈন্যসহ অন্তত ২৭ জন নিহত হন।  

বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তানের খনিজসমৃদ্ধ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। স্বাধীন বেলুচিস্তানের দাবিতে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রদেশে সোনা ও তামার খনির পাশাপাশি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গোয়াদর বন্দর রয়েছে, যেখানে চীনের বিশাল বিনিয়োগ রয়েছে।  

এই ঘটনায় পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপদে উদ্ধারের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতা চলছে।