বিশ্বের কোটি কোটি ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীর প্রিয় মুখ প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে এক হৃদয়বিদারক আবহ সৃষ্টি হয় ভ্যাটিকান সিটির সেইন্ট পিটার’স ব্যাসিলিকার সামনে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় শুরু হয় তার অন্তিম প্রার্থনাসভা, যেখানে অংশ নেন বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধি, রাষ্ট্রপ্রধান, রাজপরিবারের সদস্য ও প্রায় আড়াই লাখ শোকার্ত মানুষ।
৮৮ বছর বয়সে আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া এই প্রথম অ-ইউরোপীয় পোপের মৃত্যুতে ক্যাথলিক চার্চে নেমে এসেছে গভীর শোক। তিন দিনব্যাপী তার মরদেহ সেইন্ট পিটার’স ব্যাসিলিকায় শায়িত থাকার সময় লাখো মানুষ কফিনের পাশে দাঁড়িয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
প্রার্থনাসভা পরিচালনা করেন ইতালির প্রবীণ পাদ্রী জিওভান্নি বাত্তিস্ত রে। পোপের কফিনের পাশে এক পাশে বসানো হয় বিশ্বের নানা দেশের অতিথিদের, আর অপর পাশে উপস্থিত ছিলেন লাল টুপি পরিহিত শতাধিক কার্ডিনাল। ঘণ্টাব্যাপী এই ধর্মীয় আয়োজনে ছিল এক আবেগঘন, ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকা মুহূর্তের ছাপ।
উপস্থিত নেতাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মেলানিয়া, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার স্ত্রী, যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ বহু বিশ্বনেতা। এছাড়া ইতালি, জার্মানি, ফিলিপিন্স, আর্জেন্টিনা, পোল্যান্ড, গ্যাবনসহ ইউরোপ ও ওশেনিয়ার রাজপরিবারের সদস্য এবং সরকারপ্রধানরা প্রার্থনায় অংশ নেন।
শেষ প্রার্থনার পর তার মরদেহ স্থানান্তর করা হয় সান্তা মারিয়া ম্যাগিওরের ব্যাসিলিকায়, যেখানে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। ক্যাথলিক ঐতিহ্য অনুযায়ী, সমাধিস্থ করার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ৯ দিনের আনুষ্ঠানিক শোকপর্ব। এরপরই শুরু হবে নতুন পোপ নির্বাচনের প্রস্তুতি।
প্রসঙ্গত, দরিদ্র, প্রান্তিক এবং অভিবাসী জনগোষ্ঠীর পক্ষে দৃঢ় অবস্থান, জলবায়ু ইস্যুতে সোচ্চার ভূমিকা এবং আন্তধর্মীয় সংলাপে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পোপ ফ্রান্সিস স্মরণীয় হয়ে থাকবেন কোটি মানুষের হৃদয়ে।