সিআইএইচ ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ কম্পিউটার
সিআইএইচ
১.২ কম্পিউটার ভাইরাস বিশ্বজুড়ে কম্পিউটারে আক্রমণ চালায়। এতে পৃথিবীর
কয়েক লাখ কম্পিউটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশেও ১০ হাজার কম্পিউটার
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ভাইরাসটি ১৯৯৮ সালের ২৬ এপ্রিল ছড়ানো হয়েছিল। এটি
সুপ্ত অবস্থায় থেকে ঠিক এক বছর পর ১৯৯৯ সালের ২৬ এপ্রিল শূন্য ঘণ্টায়
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ৯৫ ও উইন্ডোজ ৯৮ অপারেটিং সিস্টেমে চলা কম্পউটারে
সক্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিলে
পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দুর্ঘটনার ১৩তম বার্ষিকীতে এই ভাইরাস
কম্পিউটারে আক্রমণ করে। তাই একে চেরনোবিল ভাইরাস নামেও ডাকা হয়। এর একাধিক
সংস্করণ ছিল, যেগুলো কোনো না কোনো মাসের ২৬ তারিখ সক্রিয় হতো। এর মধ্যে
সবচেয়ে ভয়ংকর ছিল ২৬ এপ্রিল সক্রিয় হওয়া সিআইএইচ ১.২ সংস্করণটি।সিআইএইচ ছিল
ম্যাক্রো ঘরানার ভাইরারস। ই-মেইলে সংযুক্ত ডক ফাইলের মাধ্যমে এটি ছড়াত।
এটি উইন্ডোজ ৯৫ ও উইন্ডোজ ৯৮ অপারেটিং সিস্টেমের চালক (*.exe) ফাইল নষ্ট
করে দিত। ফলে কম্পিউটার চালু হতো না। পাশাপাশি হার্ডডিস্কের পার্টিশন তুলে
দিত, এতে হার্ডডিস্কে থাকা সব তথ্য হারিয়ে যেত। কিছু ক্ষেত্রে এই ভাইরাস
মাদারবোর্ডের বায়োস (BIOS) বা বেসিক ইনপুট–আউটপুট সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত করে
ফেলে। ফলে মাদারবোর্ডও অকেজো হয়ে যায়।
চেরনোবিল ভাইরাস তৈরি করেছিলেন সেই সময়ে ২৪ বছর বয়সী তাইওয়ানের তাতুং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র চেন ইং-হাউ। তাঁর নামেই এর নামকরণ হয় সিআইএইচ। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সারা পৃথিবীতে ১০ লাখের বেশি কম্পিউটার এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। বাণিজ্যিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল আনুমানিক ৩ কোটি ৫৮ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি। সিআইএইচ ভাইরাসে আক্রান্ত বেশির ভাগ কম্পিউটারের তথ্য পুনরুদ্ধার, মাদারবোর্ড সচল করা গিয়েছিল কয়েক দিন পর। এ ভাইরাসের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, সফটওয়্যারের মাধ্যমে কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ বা হার্ডওয়্যারের ক্ষতিসাধন সম্ভব। সরাসরি কেউ কোনো অভিযোগ না করায় তাইওয়ানে চেন ইং-হাউয়ের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।