সকল খবর দেশের খবর

উচ্ছৃঙ্খল জনতার সহিংসতা আর সহ্য করা হবে না!

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ২২-৫-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৪৯

'মব ভায়োলেন্স' বা সংঘবদ্ধ জনতার নামে সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী এখন আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলার নামে সহিংসতা আর বরদাশত করা হবে না।

গতকাল বুধবার ঢাকা সেনানিবাসের সেনা প্রাঙ্গণে অফিসার্স অ্যাড্রেসে এ কথা বলেন তিনি। সভায় ঢাকায় অবস্থানরত সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা সরাসরি এবং ভার্চুয়ালি অংশ নেন। উপস্থিত একাধিক সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে আইএসপিআর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি।

সেনাপ্রধান বলেন, “গত আগস্ট থেকে দেশে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে গেলেও কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমাকে এবং সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে টার্গেট করছে। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক।” তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনোই দেশের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াবে না এবং কাউকে তা করতেও দেবে না।”

তিনি জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ থাকবে এবং সততা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে। এ লক্ষ্যে সব সদস্যকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন তিনি।

বক্তব্যে সেনাপ্রধান দেশের সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বলেন, “কী ধরনের সংস্কার হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে—সে বিষয়ে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। আমাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ বা আলোচনা করা হয়নি।”

বিশ্ব রাজনীতির উত্তেজনা, আঞ্চলিক পরিস্থিতি ও অভ্যন্তরীণ সংকটের মধ্যে মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর ইস্যুকে জাতীয় নিরাপত্তার স্পর্শকাতর বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এ ধরনের সিদ্ধান্ত কেবল একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারই নিতে পারে, তাও বৈধ প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে।”

তিনি আরও বলেন, “মানবিক করিডর বিষয়টি জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এখানে আবেগ নয়, প্রয়োজন বাস্তবতা ও সুস্পষ্ট কনসেনসাস। শুধু করিডর নয়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টিও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত।”

সেনাপ্রধান তাঁর বক্তব্যে সবাইকে সর্বোচ্চ কর্তব্যপরায়ণতা, শৃঙ্খলা ও দেশপ্রেমের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান এবং বলেন, “আমরা মজলুমদের কান্না দেখতে চাই না, আমরা তাদের অধিকার রক্ষায় পাশে থাকব। কোনো মহলই সেনাবাহিনী ও দেশের ক্ষতি করতে পারবে না, যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি।”