বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রযুক্তি ও গবেষণা

উইলো আসছে !

নিজস্ব প্রতিবেদক, অনিন্দ্যবাংলা

প্রকাশ : ২১-১২-২০২৪ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৭৩

ডিসেম্বরের শুরুতে গুগল তাদের নতুন কোয়ান্টাম চিপ 'উইলো' উন্মোচন করেছে, যা কম্পিউটিং জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। গুগলের দাবি অনুযায়ী, এই চিপটি এমন জটিল সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম, যা বর্তমানের দ্রুততম সুপারকম্পিউটারগুলোর ১০ সেপ্টিলিয়ন বছর সময় লাগবে, অথচ উইলো তা মাত্র পাঁচ মিনিটে করতে পারে। 

উইলো চিপে ১০৫টি কিউবিট রয়েছে, যা কোয়ান্টাম কম্পিউটারের মূল গঠন। কিউবিটের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে তথ্য প্রক্রিয়াকরণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তবে ত্রুটির সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। গুগলের গবেষকরা দাবি করেছেন যে, তারা উইলো চিপে এই ত্রুটি সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হয়েছেন, যা কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের ক্ষেত্রে একটি বড় অগ্রগতি। 

কোয়ান্টাম কম্পিউটার প্রচলিত কম্পিউটারের তুলনায় সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে কাজ করে। এটি ট্রানজিস্টরের পরিবর্তে কণার কোয়ান্টাম অবস্থার পরিবর্তন ব্যবহার করে, যা বাইনারি সিস্টেমের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে। বড় ডেটাসেট নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে কোয়ান্টাম কম্পিউটার অত্যন্ত কার্যকর, যা তথ্য বিশ্লেষণ, ওষুধ ও টিকা উন্নয়ন, এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গবেষণায় বিপ্লব ঘটাতে পারে।

কোয়ান্টাম কম্পিউটারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো সাইবার নিরাপত্তা। বর্তমান এনক্রিপশন সিস্টেমগুলো, যেমন AES-256, সুপারকম্পিউটারগুলোর জন্য ভাঙা অত্যন্ত কঠিন। তবে কোয়ান্টাম কম্পিউটার সহজেই এই এনক্রিপশন ভেঙে ফেলতে পারে, যা তথ্য নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। যদিও গুগল বলছে, তাদের চিপ এ ধরনের কাজের জন্য তৈরি করা হয়নি, তথাপি ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। 

 

গুগল পরিকল্পনা করছে তাদের জেমিনি এআই চালাতে উইলো চিপ ব্যবহার করার। এটি বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে দ্রুত নতুন ওষুধ ও টিকা তৈরিতে সাহায্য করবে। এছাড়া, লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (LLM) নিয়ে গবেষণায়ও কোয়ান্টাম চিপ ব্যবহৃত হবে, যা ভবিষ্যতের এআইকে আরও গভীরভাবে চিন্তা করতে সক্ষম করবে।