সকল খবর ময়মনসিংহের খবর

২৪ ঘণ্টায় গৌরীপুরে জোড়া খুনে আতঙ্ক, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ!

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ২০-৪-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০২২

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি পৃথক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে স্থানীয়রা। একদিকে ফেসবুকে প্রকাশ্য হুমকির পর কলেজছাত্র মারফত আলী ফকির (২২) কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, অন্যদিকে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাই ও ভাতিজাদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আবেদ আলী খান (৭০) নামে এক বৃদ্ধ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মারফত আলী শুক্রবার ভাগ্নির বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সাকুয়া মাঝেরচর গ্রামে যান। শনিবার রাতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মুন্সিবাড়ী মাদরাসার সামনে পৌঁছালে একদল যুবক তার মোটরসাইকেল থামিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

নিহতের পরিবার জানায়, একই গ্রামের ওয়াহিদুজ্জামান তানভিরের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল মারফতের। ফেসবুকে হুমকির বিষয়টি থানায় জানানো হলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। তানভিরের নামে থানায় হত্যাচেষ্টা সহ একাধিক মামলা রয়েছে।

অপরদিকে, গৌরীপুর উপজেলার হিম্মতনগর গ্রামে জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধে আবেদ আলী খান নিহত হন শনিবার দুপুরে। তার স্ত্রী খোদেজা আক্তার বলেন, “আমার স্বামী তার ভাই ছাবেদ আলীর কাছ থেকে জমি কিনেছিলেন। সেই জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। হামলার দিন তারা আমাদের ঘরে ঢোকার চেষ্টা করলে আমরা পাশের বাড়িতে পালিয়ে যাই। পরে তাকে ধরে এনে পিটিয়ে হত্যা করে।”

গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, হাসপাতালে আনার আগেই আবেদ আলীর মৃত্যু হয়। তার শরীরে কাটা ও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

গৌরীপুর থানার ওসি মির্জা মাযহারুল আনোয়ার বলেন, “কলেজছাত্র হত্যাকাণ্ডে নিহত ও ঘাতক দু’জনের বাড়ি নান্দাইলে। আমরা নান্দাইল থানার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। জমি সংক্রান্ত খুনের ঘটনাতেও তদন্ত চলছে।”

জোড়া খুনের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। অভিযুক্তরা পলাতক।

এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিক মো. সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, “ফেসবুকে হুমকি দেওয়া হলেও পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। এতে প্রমাণ হয়, আগাম সতর্কতা না নিলে এমন ঘটনা বারবার ঘটবে।”

গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশীষ কর্মকার বলেন, “ফেসবুকে হুমকি দিয়ে খুন অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমাদের সাইবার মনিটরিং আরও জোরদার করতে হবে। জমি বিরোধ নিয়েও তদন্ত চলছে। দুটি ঘটনাকেই আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।”