শান্তিগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হস্তান্তর দলিল রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ ওঠেছে। অভিযোগকারী সোমবার সুনামগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার বরাবরে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের উজানীগাঁও গ্রামের দ্বীপক চক্রবর্তী
জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে করা আবেদনে উল্লেখ করেন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের
(বর্তমানে শান্তিগঞ্জ) জয়কলস মৌজার ৪২৬ নম্বর খতিয়ানের ১৫২৬ দগের (আর এস
দাগ ১৫৩০) সমবায় মার্কেটের পাশের ছয় শতাংশ জমিতে থাকা দোকানকোঠার
মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব রয়েছে। ২০২৪ সালের ১৮ মার্চ সিনিয়র
সহকারী জজ আদালতে এ নিয়ে স্বত্ব মোকদ্দমা (৩২ নম্বর স্বত্ব মোকদ্দমা)
দায়ের করা হয়। আদালত এই মামলায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।বিবাদী
একই উপজেলার ডুংরিয়া গ্রামের সুহেল আহমদ ছুরত গেল ৩১ মার্চ জেলা জজ আদালতে
আপিল করলেও আদালতের বিচারক তার আবেদন নামঞ্জুর করেন। এরপর বিবাদী সুপ্রিম
কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে সিভিল রিভিশন দায়ের করেন। ওই আদালতের বিচারক
নিম্ন আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে গেল ২৯ এপ্রিল স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।
লিখিত অভিযোগে জেলা রেজিস্ট্রারকে দ্বীপক চক্রবর্তী জানান, তিনি এই
স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে সিভিল রিভিশন ফর লীভ টু আপীল দায়ের করলে, চেম্বার
জজ এম এনায়েতুর রহিম গেল পাঁচ জুন বিরোধীয় সম্পত্তিতে দখল পজিশন আট
সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। এক পর্যায়ে
স্থিতাবস্থার বজায় সংক্রান্ত আদেশের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ২৮ জুলাই তিনি
পুনরায় আবেদন করেন।
জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে করা আবেদনে দ্বীপক চক্রবর্তী দাবি করেন, আইন
অনুযায়ী স্থিতাবস্থার মেয়াদ এই লীভ টু আপিল শুনানী না হওয়া পর্যন্ত
বর্ধিত হয়েছে বলে গণ্য হয়। এই অবস্থায় আদালতের আদেশ অমান্য করে
সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারীদের যোগমসাজসে ডুংরিয়া গ্রামের সোহেল আহমদ
ছুরত’এর কাছ থেকে একই গ্রামের আব্দুল কাইয়ূম গেল ১৯ ডিসেম্বর এই জমি কিনে
নেন বলে হস্তান্তর দলিলে (নম্বর ২২১৭/২৪) উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান
দ্বীপক চক্রবর্তী।
দ্বীপক চক্রবর্তী আবেদনে উল্লেখ করেন, এই দলিল বাতিল না হলে এই ভূমির মালিকানা জটিলতা বৃদ্ধি পাবে। আবেদনকারী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এর আগে উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার সাগর রায়কেও একই ধরণের আবেদন জমা দিয়েছেন দ্বীপক চক্রবর্তী।
দোকানকোঠার ক্রেতা আব্দুল কাইয়ুম বললেন, স্থগিতাদেশ ভেঙে এনে বিক্রেতা
সোহেল আহমদ ছুরত মিয়া দোকানকোঠার দলিল করিয়েছেন। এখানে আমাদের কোন ত্রুটি
নেই।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার সাগর রায় বললেন, দলিল সৃজন করার জন্য
সকল কাগজ সঠিক পাওয়া গিয়েছিল। এজন্য দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। পরে এই
বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমি দলিল লেখককে এক পর্যায়ে শোকজ করেছি। দলিল
লেখক জবাব দিয়েছেন, এ বিষয়ে আদালত থেকে যে সিদ্ধান্ত হবে, তারা সেটাই
মেনে নেবেন।প্রসঙ্গত, এই জমি নিজের দখলে না থাকায় সহকারী জজ আদালতে মামলা করেছেন সোহেল আহমদ ছুরত মিয়া। মামলা বিচারধীন রয়েছে।