প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সরকার বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করে থাকে। তবে এ বছর শুরুর মাস পেরিয়ে গেলেও সারা দেশে সব শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছায়নি। ঠিক সেই সময়ে, জালিয়াত চক্রের মাধ্যমে বিনামূল্যের বই খোলাবাজারে বিক্রি হতে দেখা যায়। সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করার লক্ষ্যে কিছু অসাধু চক্র শিক্ষার্থীদের জন্য বিতরণ করা বই অবৈধভাবে মজুত করে খোলাবাজারে বিক্রি করছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রায় ১০ হাজার বইসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকার সূত্রাপুরের বাংলা বাজার ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গোডাউনে অভিযান চালিয়ে এসব বই জব্দ এবং দুজনকে আটক করা হয়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের এসব বইয়ের বাজারমূল্য প্রায় আট লাখ টাকা।
ডিবি জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত দুজন ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি চক্রের তথ্য পাওয়া গেছে, যাদের বিরুদ্ধে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
বিগত সরকারের আমলে বছরের প্রথম দিনে স্কুলে উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার প্রচলন শুরু হয়েছিল। তবে ২০১০ সালের পর থেকে এবারই প্রথম বই বিতরণের উৎসবে ছেদ পড়েছে। নতুন বছরের প্রথম দুদিনে ৪১ কোটি বইয়ের মধ্যে ১০ কোটি বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানোর কথা বলেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। বাকিগুলো ৩০ জানুয়ারির মধ্যে পৌঁছানোর আশা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে এনসিটিবির ওয়েবসাইটে আপলোড করা বইয়ের পিডিএফ কপি ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
বই সংকটের মধ্যেই জানুয়ারির শেষে এসে খোলাবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ বই জব্দ করার খবর দেয় ডিবি।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড গোয়েন্দা-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাবাজারের ইস্পাহানি গলিতে বিভিন্ন গোডাউনে প্রথম থেকে দশম শ্রেণির বিনামূল্যে বিতরণের সরকারি পাঠ্যবই বিক্রির উদ্দেশে মজুদ করা হয়েছিল। অভিযান চালিয়ে দুই ট্রাক বই জব্দ করা হয়, যেখানে বিভিন্ন শ্রেণির প্রায় ১০ হাজার বই রয়েছে।
ডিবি আরও জানায়, জব্দ করা বইগুলো আদালতে পাঠানো হবে এবং আদালতের নির্দেশনায় এনসিটিবিকে হস্তান্তর করা হবে।
এনসিটিবি বা মাউশি থেকে কারও সংশ্লিষ্টতা থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তারা জানিয়েছে।