বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকায় ২০২৫ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৭টি দেশের মধ্যে ১৩৪তম। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট ২০২৫-এ এ তথ্য জানানো হয়েছে। গত বছর ২০২৪ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৩টি দেশের মধ্যে ১২৯তম। এর আগে ২০২৩ সালে বাংলাদেশ এই তালিকায় ১১৮তম স্থানে ছিল।
ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে। প্রতিবেশী দেশ ভারত ১১৮তম, পাকিস্তান ১০৯তম, মিয়ানমার ১২৬তম, শ্রীলঙ্কা ১৩৩তম এবং নেপাল ৯২তম স্থানে রয়েছে।
এবারও টানা অষ্টমবারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে ফিনল্যান্ড। ফিনল্যান্ডের পরই যথাক্রমে ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইডেন, নেদারল্যান্ড, কোস্টা রিকা ও নরওয়ে রয়েছে। এছাড়া তালিকায় ৮ম স্থানে রয়েছে ইসরায়েল, এরপর লুক্সেমবার্গ, মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, অস্ট্রিয়া, ক্যানাডা এবং স্লোভেনিয়া।
অন্যদিকে, বিশ্বের সবচেয়ে অসুখী দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে আফগানিস্তান। এরপরই পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওন দ্বিতীয় এবং লেবানন তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
সুখী দেশের এই তালিকা প্রণয়নে দেশগুলোর নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান, মাথাপিছু জিডিপি, সামাজিক সুরক্ষা ও সহায়তা ব্যবস্থা, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, গড় আয়ু এবং দুর্নীতির মাত্রার মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়। এছাড়া, নাগরিকরা নিজেদের জীবন নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট, তা-ও জরিপের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়।
এই গবেষণাটি অ্যানালিটিক্স সংস্থা গ্যালাপ এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন সলিউশন নেটওয়ার্কের (এসডিএসএন) যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হয়েছে। প্রতিবেদনটি বিশ্বব্যাপী নাগরিকদের সুখ ও জীবনযাত্রার মান সম্পর্কে একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে।
বাংলাদেশের র্যাংকিংয়ে অবনতির পেছনে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, সামাজিক অস্থিরতা এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধার সীমাবদ্ধতাকে অন্যতম কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তবে, সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে আগামী দিনগুলোতে এ অবস্থার উন্নতি সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।
বিশ্ব সুখী দেশের তালিকা প্রতিবছরই দেশগুলোর নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের জন্য এই র্যাংকিং আগামী দিনে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক হিসেবে কাজ করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।