পানামা খাল দিয়ে মার্কিন সরকারি জাহাজগুলোকে এখন থেকে কোনো টোল দিতে হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে, যা বছরের পর বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থ সাশ্রয়ের সুযোগ করে দেবে।
সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পানামা সফর করেন। সেখানে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনোর সঙ্গে বৈঠক করেন এবং এ বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করেন। রুবিও জানিয়েছিলেন, পানামা সরকার মার্কিন জাহাজের জন্য টোল ছাড় দেওয়ার কথা বলেছে। এর ফলে আমেরিকার সরকারি খরচ কমবে এবং এ সিদ্ধান্তের ফলে দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, নভেম্বরের নির্বাচনে জয়লাভের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পানামা খালের 'পুনরুদ্ধারে' শক্তি প্রয়োগের কথা বলেন। তিনি পানামা খালে চীনের বিনিয়োগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প ও রুবিও পানামা খালে চীনের বিনিয়োগকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন।
পানামা অবশ্য সম্প্রতি বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, যা চীনা নেতৃত্বাধীন একটি বিশাল অবকাঠামো প্রকল্প। পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো জানিয়েছেন, তার সরকার ২০১৭ সালে চীনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত এই প্রকল্পের সমঝোতা স্মারক নবায়ন করবে না। এর ফলে চীনের পানামা খাল নিয়ে প্রভাব বিস্তার রোধে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ আরো বাড়ছে।
বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য এবং যোগাযোগে উন্নতির লক্ষ্যে চীনের 'বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ' থেকে বের হয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে পানামা যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। চীনের কর্মকর্তারা অবশ্য এ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, পানামা খালকে তারা স্থায়ীভাবে আন্তর্জাতিক নিরপেক্ষ জলপথ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।
এদিকে, ১ ফেব্রুয়ারি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও পানামা সফরকালে প্রেসিডেন্ট মুলিনোর সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, চীনের সঙ্গে সহযোগিতা করলে পানামা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১৯৭৭ সালের চুক্তি লঙ্ঘন করবে, যা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে।
এই পরিবর্তনগুলি এবং আলোচনা প্রমাণ করে যে, পানামা খাল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং রাজনীতি—বিশেষত চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব—এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হয়ে উঠছে।