ময়মনসিংহ নগরীতে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশন ও প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া এক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ। গত ২০ মার্চ রাতে নগরীর গোহাইলকান্দি এলাকা থেকে এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় চক্রটির কাছ থেকে মোবাইল সিম তৈরির যন্ত্র, ফিঙ্গার হিটার মেশিন, বায়োমেট্রিক স্ক্যানার, তিন শতাধিক নকল সিমসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মোঃ সফিকুল ইসলাম খান শনিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত ১০টা ৫০ মিনিটে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, গোহাইলকান্দি এলাকায় একটি চক্র বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মানুষের আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশন করে তা বিক্রি ও প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আয় করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে কোতোয়ালী পুলিশের একটি শক্তিশালী টিম অভিযান চালিয়ে হাফিজুল ইসলাম প্রিন্স নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ইটাখোলা থেকে আজিজুল হক ও তানভীর রহমান কাব্য নামে আরও দুই সদস্যকে আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা আলামতের মধ্যে রয়েছে তিনটি ল্যাপটপ, সাতটি মোবাইল ফোন, তিনটি ফিঙ্গার হিটার মেশিন, আটটি বায়োমেট্রিক স্ক্যানার, ৩০টি ফিঙ্গার ছাপযুক্ত নেগেটিভ, ফিঙ্গার প্রিন্ট তৈরির রাবার, ৩০০টি গ্রামীণফোন সিম এবং বিভিন্ন ব্যক্তির এনআইডি নম্বরসহ ১৫ পাতার একটি তালিকা। এ ছাড়াও একটি মোবাইল ট্যাব উদ্ধার করা হয়।
ওসি মোঃ সফিকুল ইসলাম খান জানান, চক্রটি মৃত ব্যক্তিদের আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশন করত এবং তা বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করত। এ ধরনের প্রতারণা টেলিযোগাযোগ খাতে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করে।
এ ঘটনায় কোতোয়ালী মডেল থানায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ (সংশোধনী/২০১০) এর ৩৫(২)/৫৫(৭)/৭৪ ধারায় মামলা নম্বর-৮৬, তারিখ-২১/০৩/২০২৫ দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক সাজেদ কামাল চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সনাক্তকরণ ও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ ধরনের প্রতারণা চক্র দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে। পুলিশের এ অভিযানে প্রতারণা চক্রের একটি বড় নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।