ময়মনসিংহে ভুয়া বা টেম্পারড দলিল ব্যবহার করে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের কোটি টাকার অর্থ তুলতে গিয়ে এক ব্যক্তিকে হাতেনাতে আটক করেছেন জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখার কর্মকর্তারা।বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনায় তাঁকে আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।আটক ব্যক্তির নাম মো. উজ্জ্বল হোসেন (৩২)। তিনি ময়মনসিংহ শহরের চর ঈশ্বরদিয়া মৌজার বাসিন্দা।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, উজ্জ্বল হোসেন জাল ও টেম্পারড দলিল প্রদর্শন করে ভূমি অধিগ্রহণ ক্ষতিপূরণের অর্থ তোলার চেষ্টা করছিলেন। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে দলিল যাচাই করে দেখা যায়, দলিলটি জাল ও পরিবর্তিত। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আটক করা হয়।
জেলা প্রশাসক মো. মফিদুল আলম বলেন,“আটক উজ্জ্বল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত একটি জালিয়াতি চক্রের সদস্য। এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কি না তা তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশকে বলা হয়েছে, চক্রের অন্য সদস্যদের দ্রুত শনাক্ত ও আটক করতে।”
জেলা প্রশাসক আরও জানান,“চর ঈশ্বরদিয়া মৌজার অধিগ্রহণকৃত জমির টেম্পারড দলিলসহ হাতেনাতে ধরা পড়ায় ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’-এর আওতায় নিয়মিত মামলা দায়ের করে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।”
তিনি সর্বসাধারণকে সতর্ক করে বলেন,“ভূমি সংক্রান্ত জালিয়াতি বা দালালদের প্ররোচনায় না পড়ে দলিল যাচাই ছাড়া কোনো প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবেন না।”
ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ অনুযায়ী,একই অপরাধ পুনরায় করলে দ্বিগুণ শাস্তি দেওয়া যাবে।জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
ধারা ৬ অনুযায়ী, যদি দলিল বা কাগজ এক একর বা তার বেশি জমি সংক্রান্ত হয়, অথবা এতে রিয়েল এস্টেট বা ল্যান্ড ডেভেলপার জড়িত থাকে, তাহলে ২ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।এ ছাড়া আইনে সাক্ষীর সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ধারা ৩৪ অনুযায়ী, প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অথবা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এই অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে আইনে নির্ধারিত অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড দিতে পারবেন।
ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণ তোলার প্রক্রিয়ায় ভুয়া দলিল ও জাল স্বাক্ষর ব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা বেড়েছে।এ কারণে ভূমি অধিগ্রহণ শাখা দলিল যাচাই ও ডিজিটাল নথি সংরক্ষণে আরও কঠোরতা আরোপ করেছে্।