সকল খবর দেশের খবর

রাজি হওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার সামনে কী ঘটেছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক, অনিন্দ্যবাংলা

প্রকাশ : ১-২-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৫৫

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিয়োগের আগে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে তিনি সম্প্রতি ফিন্যানশিয়াল টাইমসের বিশেষ পডকাস্ট 'রাখমান রিভিউ' তে কথা বলেছেন। ২০০৭ সালে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় তিনি এই পদ গ্রহণ করতে রাজি হন, যেটি ছিল একটি ঐতিহাসিক মোড়।

ড. ইউনূস জানান, যখন প্রথম তাকে ফোন করা হয়, তিনি ফ্রান্সের প্যারিসে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "আমি তখন একটি ছোট অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতালে ছিলাম। সেই সময় ছাত্রনেতারা আমাকে ফোন করে জানান, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এবং তারা নতুন সরকার গঠন করতে চান। তারা আমাকে প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার প্রস্তাব দেন।"

ইউনূস আরও জানান, প্রথমে তিনি এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেছিলেন, "আমি বললাম, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না এবং এর সাথে যুক্ত হতে চাই না। বাংলাদেশে অনেক ভাল নেতা আছেন, তাদের মধ্যে একজনকে নির্বাচন করুন।" কিন্তু ছাত্রনেতারা বারবার তাকে অনুরোধ করে এবং শেষ পর্যন্ত ইউনূস সিদ্ধান্ত নেন, "যেহেতু তারা রাজপথে জীবন দিয়েছে, এত রক্তক্ষয় হয়েছে, আমি এখনই তাদের পাশে দাঁড়াতে চাই।"

অবশেষে তিনি প্রধান উপদেষ্টা পদে রাজি হন এবং হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসেন। তার আগে, হাসপাতালে অবস্থানরত অবস্থায় তিনি প্যারিসের নার্সদের কাছ থেকে ফুলের তোড়া পেয়েছিলেন এবং জানানো হয়েছিল যে, গণমাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন।

এদিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, "একটু পর, হাসপাতালের প্রধানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এসে আমাকে ফুলের তোড়া উপহার দেন এবং বলেন, 'আপনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।' তারা আমাকে বিমানবন্দরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে বলল, যাতে আমি দ্রুত দেশে ফিরে যেতে পারি।"

ড. ইউনূস বলেন, "পরবর্তীতে ফরাসি সেনাবাহিনী আমাকে নিরাপদে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে সাহায্য করে। বাংলাদেশে ফেরার পর, বিমানবন্দরে থেকেই আমি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলাম, সকলকে শান্তি, ধৈর্য ও ঐক্য বজায় রাখতে আহ্বান জানাই।"

এভাবে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রধান উপদেষ্টা পদে যোগ দেওয়ার গল্পটি ছিল এক বৈশ্বিক রাজনৈতিক মুহূর্ত, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকে।