সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত জমি বা স্থাবর সম্পত্তির যৌথ নামজারি বা রেকর্ড সংশোধনের আবেদন অনেক ক্ষেত্রে নামঞ্জুর করা হচ্ছে, যা যথাযথ নয়। এ ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে নাগরিকদের বিভিন্ন ধরনের হয়রানির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
ওয়ারিশসূত্রে অর্জিত জমির মালিকদের নামজারি মূলত দুইভাবে হতে পারে। প্রথমত, কোনো মৃত ব্যক্তির সকল ওয়ারিশগণ যৌথভাবে নামজারির আবেদন করতে পারেন, যাতে তাদের নাম একটি খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত হয়। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ওয়ারিশদের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র বা সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছ থেকে ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহ করে আবেদনের সঙ্গে দাখিল করতে হবে। এই ধরনের আবেদন পাওয়ার পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) নামজারি মামলা দায়ের করে, মৃত ব্যক্তির মোট জমির বিপরীতে প্রত্যেক ওয়ারিশের প্রাপ্য হিস্যা উল্লেখপূর্বক যৌথ খতিয়ান সৃজন করবেন। এক্ষেত্রে বণ্টননামা দলিলের প্রয়োজন হয় না।
দ্বিতীয়ত, যদি ওয়ারিশগণ পৃথকভাবে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে চান এবং নিজ নিজ অংশের পৃথক খতিয়ান সৃজন করতে চান, তাহলে তাদের জমাভাগ সংক্রান্ত একটি আপোষ বণ্টননামা দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এই দলিলের ভিত্তিতে পৃথকভাবে নামজারির আবেদন করলে প্রত্যেক ওয়ারিশের নামে পৃথক খতিয়ান সৃজন করা যাবে।
সংশ্লিষ্ট সকলকে অবগত করা যাচ্ছে যে, উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত জমি বা স্থাবর সম্পত্তির যৌথ নামজারির আবেদন শুধু ওয়ারিশ সনদের ভিত্তিতে বৈধ এবং তা বণ্টননামা দলিল ব্যতিরেকেই অনুমোদনযোগ্য। তবে, পৃথক পৃথক খতিয়ান সৃজনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০-এর ১৪৩খ উপধারা অনুযায়ী অবশ্যই বণ্টননামা দলিলের ভিত্তিতে নামজারি করতে হবে। সুতরাং, কোনো মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশগণ যৌথভাবে নামজারির আবেদন করলে শুধুমাত্র বণ্টননামা দলিল না থাকার অজুহাতে তা নামঞ্জুর করা যাবে না।
সকল ভূমি অফিস ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে যথাযথ নির্দেশনা অনুসরণের জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।