ওজন কমানো অনেকের জন্য একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। তবুও, বেশিরভাগ মানুষ যখন ওজন কমানোর চেষ্টা করেন, তখন পেটের মেদ বা ভুঁড়ি কমাতে হিমশিম খেতে হয়। আপনি হয়তো খাওয়া কমিয়েছেন, ব্যায়ামও করছেন, কিন্তু ভুঁড়ি তেমন কমছে না। কেন এমন হয়?
স্কয়ার হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা. তাসনোভা মাহিন বলেন, পেটের মেদ কমাতে হলে শুধুমাত্র খাবারের পরিমাণ কমানো নয়, বরং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করতে হবে। সঠিক খাবার, ব্যায়াম, ঘুম, মনস্তাত্ত্বিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যান্য অভ্যাসের সমন্বয়ে মেদ কমানো সম্ভব।
খাবারের বিষয়: ভুঁড়ির মেদ কমাতে হলে প্রথমেই আপনার খাদ্যাভ্যাস ঠিক করতে হবে। তেল-চর্বি, মিষ্টি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া প্রয়োজন। হোল গ্রেইন বা গোটা শস্য থেকে তৈরি খাবার বেছে নিন, যেমন লাল চাল, লাল আটা, ওটস ইত্যাদি। ইনস্ট্যান্ট বা দ্রুত রান্না করা খাবার এবং সস, কেচাপ, মেয়োনিজ এগুলো এড়িয়ে চলুন। এছাড়া ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। তবে মিষ্টি ফল বা আলু কম খাবেন।
পানীয়: পানীয়ের ক্ষেত্রে মিষ্টি পানীয়, কোমল পানীয় বা জুস থেকে বিরত থাকতে হবে। চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা একেবারেই গুরুত্বপূর্ণ। প্রচুর পানি পান করতে হবে, যাতে শরীরের পানিশূন্যতা রোধ হয় এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ব্যায়ামের ধরন: ভুঁড়ির মেদ কমানোর জন্য সঠিক ধরনের ব্যায়াম করা জরুরি। দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, হুলা হুপ ঘোরানো এবং দড়িলাফ করা এসব কার্যকর ব্যায়াম। পেশি সক্রিয় করার জন্য এসব ব্যায়াম করুন, যাতে আপনার হৃৎপিণ্ডের গতি এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি বাড়ে।
ঘুম ও মানসিক চাপ: ভালো ঘুম না হলে মেদ কমানো কঠিন হয়ে যায়। দিনে কমপক্ষে সাত ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। নিয়মিত ঘুমানো শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। মনস্তাত্ত্বিক চাপও মেদ জমানোর একটি প্রধান কারণ, কারণ এটি কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বাড়ায়। তাই মানসিক চাপ কমিয়ে, প্রফুল্ল মন নিয়ে মেদ ঝরাতে সাহায্য করবে।
ধূমপান: যারা ধূমপান করেন, তাদের জন্য মেদ ঝরানো আরও কঠিন। ধূমপান করলে শরীরে খারাপ চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়, যার ফলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মেদ জমে। তাই ধূমপান পরিহার করতে হবে।
ভুঁড়ি কমানোর জন্য এই সব দিকগুলো খেয়াল রাখতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ভালো ঘুম এবং মানসিক চাপ কমানোর মাধ্যমে আপনি ভুঁড়ির মেদ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।