সকল খবর ভূমি বিষয়ক খবর

ভূমি মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনায় শান্তি ফিরছে জমিজমায়

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ৭-৮-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০১০

বাংলাদেশে ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা জটিলতা ও আইনি অনিশ্চয়তা অবশেষে নিরসনের পথে। বিশেষ করে জমি ভাগ না করে ব্যবহার, নামজারি বা বিক্রির ক্ষেত্রে যেসব বিভ্রান্তি সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলছিল, সম্প্রতি ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি পরিপত্রের মাধ্যমে সেই অনিশ্চয়তা দূর হয়েছে।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে যদি একাধিক ওয়ারিশ পারস্পরিক সমঝোতায় "আপোষ বণ্টননামা" দলিল করেন এবং তা রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করেন, তাহলে তারা যে যার নির্ধারিত অংশ এককভাবে ভোগদখল ও মালিকানা প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন। এতে জমি একাধিক দাগে ভাগ না হয়ে নির্দিষ্ট দাগে যার যা অংশ, সে সেটির মালিক হবে। সংশ্লিষ্ট দাগে নামজারি সম্পন্ন হওয়ার পর, ওই জমি বিক্রি-হস্তান্তরসহ সব ধরনের আইনগত কার্যক্রম চালানো যাবে।

পুরনো নিয়মে কী ছিল জটিলতা?
আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি "অবিভক্ত সম্পত্তি" হিসেবে গণ্য হয়, যতক্ষণ না সেটি দলিলভুক্ত হয়। অতীতে জমির দাগভিত্তিক ভাগ না হলে বা বণ্টননামা না থাকলে, একজন ওয়ারিশের মালিকানা একাধিক দাগে ছড়িয়ে যেত। ফলে কোনো দাগ থেকে বিক্রি বা নামজারিতে আইনি জটিলতা তৈরি হতো।

নতুন নিয়মে কী সুবিধা?
নতুন নির্দেশনার ফলে, যদি ওয়ারিশরা পারস্পরিক সমঝোতায় আপোষ বণ্টননামা রেজিস্ট্রি করেন, তবে তারা নির্দিষ্ট দাগের নির্ধারিত অংশে পূর্ণ মালিকানা পাবেন। এতে ভবিষ্যতে আর কোনো ওয়ারিশ সেই জমির ওপর দাবি করতে পারবে না। এমনকি জমির দখল, বিক্রি বা হস্তান্তরও নির্ভর করবে সেই রেজিস্ট্রিকৃত দলিল অনুযায়ী। ফলে পরিবারভিত্তিক জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব, মামলা-মোকদ্দমা কমবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সতর্কতা ও করণীয়
ভূমি মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে—আপোষ বণ্টননামা ছাড়া এক দাগ থেকে অংশবিশেষ জমি বিক্রি করলে তা অবৈধ বিবেচিত হবে। তাই জমি হস্তান্তর বা বিক্রির আগে রেজিস্ট্রিকৃত আপোষ বণ্টননামা থাকা আবশ্যক। ওয়ারিশ সনদের ভিত্তিতে কেবল নামজারি করলেও, তাতে একাধিক দাগে অংশীদারিত্ব থেকেই যাবে এবং আইনি জটিলতা এড়ানো যাবে না।

প্রবাসীদের জন্য স্বস্তির বার্তা
এই নতুন নির্দেশনা প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দূর থেকে জমি ব্যবস্থাপনায় তাদের বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। বণ্টননামা রেজিস্ট্রির মাধ্যমে এখন তারা সহজেই নিজের প্রাপ্য অংশ নির্ধারণ করে মালিকানা নিশ্চিত করতে পারবেন।

ভূমি ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন এই প্রক্রিয়া বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে। এতে করে জমি সংক্রান্ত বিভ্রান্তি, জটিলতা ও আইনি দ্বন্দ্ব কমে আসবে এবং সাধারণ মানুষও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজ নিজ সম্পত্তির মালিকানা ভোগ করতে পারবে।

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=hAyX-RhvzFw&ab_channel=LegalKnowledge