ময়মনসিংহ জেলা আদালত চত্বরে গ্রেপ্তার অভিযানকে কেন্দ্র করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও এক আইনজীবীর মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে আদালতপাড়ায়।

বুধবার (১৮ জুন) বিকালে ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর ভবনের সামনে এই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, একটি হত্যা মামলায় জামিনে থাকা দুই আসামিকে হঠাৎ সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা আটক করতে গেলে আইনজীবী রাসেল তালুকদার বাধা দেন। এ সময় তার সঙ্গে ডিবি সদস্যদের বাকবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

পরে তিনজনকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আইনজীবী রাসেল তালুকদারকে কিছু সময় পর ছেড়ে দেওয়া হলেও লিয়ন সরকার (২৫) ও রিপন সরকার (২২) নামে দুই যুবককে আটক রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লিয়ন সরকারকে আটক করা হয়েছে। তাকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।”

তবে কোন সংগঠন বা এলাকার রাজনীতির সঙ্গে লিয়নের সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে নতুন কোনো মামলা আছে কিনা—সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানাতে পারেননি ওসি।

আটক দুই যুবক ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সিধলা ইউনিয়নের হাসনপুর গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৮ সালের একটি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে তারা জামিনে মুক্ত ছিলেন।

আইনজীবী রাসেল তালুকদার বলেন, “মক্কেলদের সঙ্গে আমি আদালত থেকে বের হওয়ার পর হঠাৎ ডিবি পুলিশ এসে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি বাধা দিলে আমাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় এবং লাঞ্ছিত করে।”

ঘটনার পর ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যসচিব সৈয়দ সাদউদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিষয়টি ডিবি ও আইনজীবীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির ফলে হয়েছে। পরে আলোচনার মাধ্যমে আইনজীবীকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বিষয়টি এখন মীমাংসা হয়েছে।”

তবে আইনজীবী মহলে এ ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা মনে করছেন, আদালতপাড়ায় এ ধরনের আচরণ আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি।

এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ডিবির পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা বা মামলা দায়ের করা হয়নি।