রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা বিশ্বকে ধাবিত করছে একটি সম্ভাব্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে। তার মতে, এই দুটি অঞ্চল এখন বৈশ্বিক সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার (২০ জুন) রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে আয়োজিত আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামের (SPIEF) মূল অধিবেশনে ভাষণদানকালে পুতিন এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি সংঘর্ষের চরম আশঙ্কা তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক শান্তি বজায় রাখার জন্য প্রতিটি সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান অত্যন্ত জরুরি। আমরা বৈশ্বিক যুদ্ধের সম্ভাবনায় উদ্বিগ্ন।”
নিরাপত্তা ইস্যুতে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সমালোচনা করে পুতিন বলেন, “ন্যাটো বারবার রাশিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগকে অবজ্ঞা করছে। তাদের এই আচরণ উপনিবেশবাদী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।”
মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন পুতিন। তিনি বলেন, “ইসরায়েল যদি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করে থাকে, আমি আশা করি এটি শুধুমাত্র কথার কথাই থাকবে। বাস্তবে এমন কিছু ঘটলে তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।”
এ সময় পুতিন দাবি করেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, ইরানের বুশেহর পারমাণবিক স্থাপনায় কর্মরত রুশ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।
পুতিনের এই বক্তব্যের আগেই রুশ প্রেসসচিব দিমিত্রি পেসকভ স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “ইরানে সরকার পরিবর্তনের ডাক যারা দিচ্ছেন, তাদের বুঝতে হবে এটি শুধু অগ্রহণযোগ্য নয় বরং এমন পদক্ষেপ ইরানে চরমপন্থার বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।”
তিনি আরও হুঁশিয়ার করে বলেন, “আয়াতুল্লাহ খামেনিকে হত্যার হুমকি যারা দিচ্ছেন, তারা যেন মনে রাখেন—এ ধরনের পদক্ষেপ গোটা অঞ্চলজুড়ে এক ভয়ংকর ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলে দিতে পারে।”
বিশ্লেষকদের মতে, পুতিনের এই বক্তব্য বিশ্বব্যাপী ভিন্নমতের রাষ্ট্রগুলোর প্রতি এক ধরনের বার্তা, যেখানে আন্তর্জাতিক কূটনীতির পরিবর্তে সংঘাতকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়ছে।