সকল খবর দেশের খবর

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সংকট, গরমে লোডশেডিংয়ের শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক, অনিন্দ্যবাংলা

প্রকাশ : ৫-২-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫১১২

দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিপুল পরিমাণ দায়ের কারণে গুরুতর আর্থিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) এর কাঁধে বর্তমানে ৬৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বকেয়া রয়েছে। পাশাপাশি দেশীয় বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার বকেয়া পড়েছে। বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মালিকরা জানিয়েছেন, এই বকেয়া পরিশোধ না হলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানো সম্ভব হবে না।

বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ১১ হাজার মেগাওয়াট, তবে শীতের পর মার্চ থেকে চাহিদা আরও বাড়বে এবং এ বছর তা ১৮ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এই অবস্থায় লোডশেডিংয়ের শঙ্কা তৈরি হয়েছে, যার প্রভাব সেচ ব্যবস্থাপনাতেও পড়তে পারে।

বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিপিএ) সভাপতি ডেভিড হাসানাত জানান, অতীতে প্রায় ৬ মাসের বকেয়া ছিল, কিন্তু তখন ডলারের মানের অবনতি না হওয়ায় তারা সরব হননি।

পিডিবির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানিয়েছেন, বকেয়া পরিশোধ করার কাজ চলছে এবং ভবিষ্যতে কয়লা ও গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে বিপ্পা সভাপতি কে এম রেজাউল হাসনাত বলেন, "সরকারের আর্থিক সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের জন্য সমস্যা তৈরি হয়েছে। অর্থ না পেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব নয়, যা গরমে প্রভাব ফেলবে।"

বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেসরকারি খাতের গুরুত্ব উল্লেখযোগ্য। বিআইডিএস এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর কারণে প্রতি বছর অন্তত ১ বিলিয়ন ডলার বা ১১ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান জানান, ধাপে ধাপে অর্থ পরিশোধের প্রক্রিয়া চলছে এবং সরকারসহ অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

এদিকে, ক্যাবের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. শামসুল আলম অভিযোগ করেছেন যে, আগের সরকারের ধারাবাহিকতায় বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সুবিধার জন্য সরকার বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্থাপিত ক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াট হলেও, ১৬ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতেই বিদ্যুৎ খাত হিমশিম অবস্থায় রয়েছে।